শনিবার (১৯ আগস্ট) রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তাল-আফারে স্থল অভিযানের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল-আবাদি। তারপরই রোববার (২০ আগস্ট) এই জোরদার অভিযান শুরু হয়।
অভিযান শুরুর আভাস হিসেবে ক’দিন ধরেই শহরটির বিভিন্ন স্থানে আইএসের সন্দেহভাজন স্থাপনা লক্ষ্য করে বোমা ফেলছিল ইরাকি যুদ্ধবিমান। এমনকি প্রধানমন্ত্রী আবাদির ভাষণের আগেও তাল-আফারে লিফলেট বিতরণ করে ‘চূড়ান্ত অভিযানের’ বিষয়ে সতর্কতা দেয় বিমান বাহিনী।
রোববার অভিযান শুরুর আগে সামরিক বাহিনীর পোশাক পরে ইরাকি পতাকার পাশে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা তাল-আফার মুক্ত করতে অভিযানে নামছি। আমি জঙ্গিদের বলছি, হয় সত্যিকারার্থে আত্মসমর্পণ করো, নতুবা মরার জন্য প্রস্তুত হও। পুরো বিশ্ব আমাদের সামরিক বাহিনীর পাশে আছে। সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, ইরাকে আইএসের দখলে থাকা শেষ ক’টি শহরের মধ্যে তাল-আফার একটি। সরকারি বাহিনী আশা করছে এখান থেকে কোণঠাসা করে তাদের আরও পিছিয়ে দেওয়া হবে এবং ক্রমে ইরাককে আইএসমুক্ত করা হবে।
আরব বসন্তের পর উত্তাল হয়ে পড়া ইরাকের বিশাল এলাকা দখল করে খিলাফত ঘোষণা করে আইএস। ২০১৪ সালের জুনে তারা দখল করে নেয় মসুল এবং ৫৫ কিলোমিটার দূরের তাল-আফার। মানবাধিকার ও ত্রাণ সহায়তা সংগঠনগুলোর তথ্যানুযায়ী, আইএসের দখলে যাওয়ার পর তাল-আফারে লাখো মানুষ বাস্তুহারা হয়। নিহত হয় শত শত মানুষ।
প্রথম দিকে আইএস শক্তি দেখালেও পরবর্তীতে পশ্চিমা বাহিনীর সহায়তায় বর্বর গোষ্ঠীটিকে হটাতে থাকে ইরাকি বাহিনী। গত জুলাইয়ে জোরদার অভিযানে মসুল থেকে পিছু হটতে বাধ্য হয় জঙ্গিরা। সবচেয়ে বড় ঘাঁটি থেকে বিতাড়িত হওয়ার ফলে আইএসের কার্যত অবস্থান খুইয়ে ফেলে। এরপরই ইরাকি বাহিনী আইএসের বিরুদ্ধে পরবর্তী অভিযানের ছক কষে। মাস দেড়েক পর তাল-আফারে এই অভিযান শুরু হলো।
সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, শিয়া-সুন্নি অধ্যুষিত তাল-আফার ছিল মসুল থেকে সিরিয়া যাওয়ার প্রধান রুট এবং এই শহর দিয়েই মসুলসহ বিভিন্ন এলাকায় রসদ সরবরাহ করতো জঙ্গিরা। তাল-আফার থেকেও তারা নিশ্চিহ্ন হলে ইরাক সরকার আইএসবিরোধী অভিযানে এগিয়ে যাবে আরও অনেকখানি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৭
এইচএ