সোমবার (২১ আগস্ট) মার্কিন ও দক্ষিণ কোরিয়ান বাহিনীর মধ্যে শুরু হচ্ছে ১০ দিনব্যাপী এই মহড়া। বরাবরের মতোই দক্ষিণ কোরিয়ার মাটিতে উভয়পক্ষের স্থল, নৌ ও বিমানবাহিনী সামরিক সরঞ্জাম নিয়ে এই মহড়া চালাবে।
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মহড়ায় মার্কিন সাড়ে ১৭ হাজার সেনা অংশ নেবে। বরাবরের মতো থাকবে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপুল সেনাও।
দু’পক্ষের এই মহড়ার প্রস্তুতি দেখে রোববার (২০ আগস্ট) উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে হুমকি দিয়ে বলা হয়, এ ধরনের মহড়া কোরীয় উপদ্বীপের পরিস্থিতিকে পরমাণু যুদ্ধের অনিয়ন্ত্রণযোগ্য পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে এবং উত্তেজনার আগুনে ঘি ঢেলে দিচ্ছে। উত্তর কোরিয়া আক্রান্ত হলে শত্রুপক্ষকে ‘নির্দয় হামলার’ মুখোমুখি হতে হবে।
পিয়ংইয়ং আরও স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দিয়ে বলে, উত্তর কোরিয়া আক্রান্ত হলে এর সেনাবাহিনী যুক্তরাষ্ট্রে যেকোনো সময় আঘাত করতে পারে। কেবল প্রশান্ত মহাসাগরের সামরিক ঘাঁটি গুয়াম বা কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি হাওয়াই নয়, যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডের যেকোনো স্থান উত্তর কোরিয়ার সামরিক বাহিনীর নির্দয় আঘাতের মুখোমুখি হবে।
উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি নিয়ে গত ক’মাস ধরেই পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে ওয়াশিংটন ও তার মিত্র সিউল-টোকিওর বাকযুদ্ধ চলে আসছে। উভয়পক্ষই দিয়ে আসছে পাল্টাপাল্টি হুমকি।
যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে উত্তর কোরিয়াকে ‘শায়েস্তা’ করার হুমকি দেওয়া হলে পাল্টা পিয়ংইয়ং গত সপ্তাহে জানায়, তারা গুয়ামে হামলার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে ফেলেছে। তবে সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের আগে যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতা পর্যবেক্ষণ করবে তারা।
এই পর্যবেক্ষণের বার্তা দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উত্তর কোরিয়ার বোধোদয় হয়েছে বলে ‘সাধুবাদ’ জানান। কিন্তু ক’দিন পরই যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া এতদঞ্চলে সামরিক মহড়ার ঘোষণা দিলে তেতে যায় উত্তর কোরিয়া। আর সামরিক মহড়ার দিন ঘনিয়ে আসায় দেশটি দিয়ে দেয় চূড়ান্ত বার্তা।
চীন-রাশিয়া উভয়পক্ষকেই সহনশীলতা দেখানোর আহ্বান জানালেও বিশ্লেষকরা বলছেন, তুমুল উত্তেজনার মধ্যে এই সামরিক মহড়া পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করছে। যার ইঙ্গিত উত্তর কোরিয়াই দিয়ে বলেছে, যদি কোনো প্রতিরোধযুদ্ধের প্রয়োজনীয়তার ছিটেফোটাও আভাস দেখা, তবে পরবর্তী যথাযথ পদক্ষেপ নেবে তাদের বাহিনী।
এখন আশঙ্কা করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র-দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক মহড়ার জবাবে উত্তর কোরিয়াও কোনো বার্তা দিয়ে বসতে পারে। সেটা ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করে হোক, অথবা অন্য কোনো উপায়ে। কিন্তু এতে উত্তেজনার আগুন যে আরও শিখা বাড়াবে, সে নিয়েই শঙ্কায় কোরীয় অঞ্চলের বাসিন্দারা।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৭
এইচএ/