আফগানিস্তানের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ১৯ আগস্টদেশটির রাজধানী কাবুলে জনপ্রিয় আফগান সংগীত তারকা আরিয়ানা সাইদের মিউজিক কনসার্টের আয়োজন করা হয়। কনসার্ট বন্ধ করতে আরিয়ানাকেও নানাভাবে হুমকি দেওয়া হয়।
মিউজিক কনসার্টের মতো কোনো অনুষ্ঠান কাবুল শহরে বিরল ঘটনা। এর পেছনে দায়ী গান-বাজনা ও আনন্দ উদযাপন সম্পর্কে আফগান জনগণের রক্ষণশীল মানসিকতার দীর্ঘ ইতিহাস। আফগানিস্তানের বেশিরভাগ মানুষই সংগীতকে বিরূপ চোখে দেখে।
এ কারণে কাবুলের একটি আন্তর্জাতিক হোটেলে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে এই কনসার্টের আয়োজন করা হয়। আর তাতে উপস্থিত হয় হাজারো তরুণ-তরুণী।
কনসার্টটি প্রথমে কাবুলের গাজী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন আয়োজকরা। নির্ধারিত দিনের অনেক আগেই তিন হাজার টিকিট বিক্রি হয়। কিন্তু নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে কর্তৃপক্ষের সংশয় থাকায় ভেন্যু পরিবর্তন করতে হয়।
কনসার্টে পুরুষদের তুলনায় নারী শ্রোতার সংখ্যাই ছিল বেশি। আরোপিত রক্ষণশীলতার শেকল থেকে বেরিয়ে কাবুলের তরুণীরা মেতে উঠেন আনন্দ-উল্লাসে।
কনসার্ট দেখতে আসা এক তরুণী জানান, সন্ত্রাসবাদীদের কাঁচকলা দেখানোর জন্যেই তিনি কনসার্টে এসেছেন। শিল্প ও সংস্কৃতির উপর হামলাকারীদের পৃথিবী থেকে বিদায় নেওয়া উচিৎ বলে তিনি মনে করেন।
কনসার্টের মূল আকর্ষণ সংগীত তারকা আরিয়ানা সাইদকে আখ্যায়িত করা হয় আফগানিস্তানের ‘কিম কারদাশিয়ান’ হিসেবে। আফগান লোকসংগীত ও পপসংগীতের মাধ্যমে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান তিনি। খোলামেলা পোশাকে টেলিভিশনে নিয়মিত উপস্থিতির জন্য তিনি সমালোচিতও হয়েছেন।
একাধিক রিয়েলিটি শোতে বিচারকের ভূমিকা পালন করা আরিয়ানার জন্য কাবুল কনসার্টটি ছিল খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। কনসার্টের আগে বিভিন্ন পক্ষ থেকে হুমকি দেওয়া হয় এই সংগীত তারকাকে। তবু ভক্তদের মুখে হাসি ফোটাতে কনসার্টে গেয়েছেন তিনি।
সংবাদ মাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আরিয়ানা বলেন, ‘আফগানিস্তানের অনেকেই সংগীতের বিপক্ষে। এমনকি ঈদ, স্বাধীনতা দিবস ও নববর্ষের মতো বিভিন্ন আনন্দ অনুষ্ঠানেরও বিরোধী লোকের সংখ্যা কম নয়। এদের কার্যকলাপ রুখতে সবার একাত্ম হওয়ার এখনই সময়’।
এই কনসার্টের সম্পূর্ণ আয় আফগানিস্তানের সার-ই-পুল প্রদেশে জঙ্গি হামলায় নিহতদের পরিবারকে দেওয়া হবে বলে জানান আয়োজকরা।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৩ ঘণ্টা, ২১ আগস্ট, ২০১৭
এনএইচটি/আরআর