রাস্তায় রাস্তায় হাজারো ‘ভক্তের’ সমাগম ও ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে শুক্রবার (২৫ আগস্ট) বিকেলে এ রায় ঘোষণা করেন রাজ্যের পঞ্চকুলায় স্থাপিত কেন্দ্রীয় তদন্ত অধিদফতরের (সিবিআই) বিশেষ আদালত। তবে রাম রহিমের সাজা ঘোষণা করা হবে আগামী ২৮ আগস্ট (সোমবার)।
রায় ঘোষণার পরই রাম রহিমকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে। সাজা ঘোষণা পর্যন্ত তিনি থাকবেন একটি সেনাঘাঁটিতে। ধারণা করা হচ্ছে, রাম রহিমের সাত বছর কারাদণ্ড ঘোষণা করা হতে পারে। হরিয়ানাভিত্তিক ‘অলাভজনক’ সমাজকল্যাণ ও আধ্যাত্মিক সংগঠন ‘ডেরা সাচা সৌদা’র প্রধান রাম রহিমের ভারতজুড়ে লাখো ‘ভক্ত’ রয়েছে। রাম রহিম একাধারে ধর্মপ্রচারক, সমাজ সংস্কারক, গায়ক, চিত্রনায়ক ও নির্মাতা। তার ডেরা সাচা সৌদা গঠিত হয়েছে হিন্দু, মুসলিম, শিখসহ সব ধর্মের চেতনা মিশিয়ে।
অনুসারীদের মধ্যে দুই নারীকে রাম রহিম ১৯৯৯ সালে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ তদন্তের ভিত্তিতে ২০০২ সালে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে সিবিআই। এরপর সেই মামলার বিচার করতে হরিয়ানারই পঞ্চকুলায় বিশেষ আদালত স্থাপন করা হয়। ২০০৭ সালে শুনানি শুরুর মাধ্যমে দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়া শেষে শুক্রবার রায় ঘোষণা হলো।
এ ‘ধর্মীয় গুরু’র রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে হরিয়ানা-পাঞ্জাব-রাজস্থান রাজ্যসহ পুরো ভারতজুড়ে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রাস্তায় রাস্তায় নেমেছে আধা-সামরিক বাহিনীসহ পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার বিপুলসংখ্যক সদস্য। কিছু কিছু স্থানে সেনাবাহিনী মোতায়েনেরও খবর মিলেছে। কয়েকটি এলাকায় ইন্টারনেট সেবাও বন্ধ করে দেওয়া হয় ৪৮ ঘণ্টার জন্য।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, রায় ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে পঞ্চকুলা, চন্ডিগড়সহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ শুরু করে রাম রহিমের অনুসারীরা। পঞ্চকুলায় গণমাধ্যমের গাড়ি ও পুলিশের ওপর হামলার খবর মিলেছে। অগ্নিসংযোগের খবর মিলেছে পাঞ্জাবে রেলস্টেশন ও পেট্রোল পাম্পে। হরিয়ানা ও পাঞ্জাবের কয়েকটি শহরে জারি করা হয়েছে কারফিউও।
এদিকে, এ ‘ধর্মীয় গুরু’র বিরুদ্ধে রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় ভারতে অবস্থানরত নাগরিকদের সতর্ক করে দিয়েছে যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা কয়েকটি দেশ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০১৭
এইচএ/