ক্যারিবিয়ান সাগরের দ্বীপরাষ্ট্র কিউবায় আঘাত হানার পর হারিকেনটি এখন মেক্সিকো উপসাগর ও আটলান্টিক মহাসাগরকে সংযুক্ত করা ফ্লোরিডা প্রণালীতে অবস্থান করছে। শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় রাত থেকেই ফ্লোরিডার দক্ষিণ-মধ্যাঞ্চলে ‘ইরমা’র লক্ষ্মণ দেখা যাবে বলে আভাস দেওয়া হচ্ছে।
কিউবায় আঘাত হানার আগে এটি ছিল ৫ নম্বর ক্যাটাগরির শক্তিশালী হারিকেন। সেখানে তাণ্ডব চালিয়ে এটি শনিবার সকাল নাগাদ ৪ নম্বর ক্যাটাগরির হারিকেনে রূপ নেয়। কিন্তু ফ্লোরিডার দিকে এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে হারিকেনটি ফের শক্তি সঞ্চয় করছে।
ফ্লোরিডার আবহাওয়া অফিস বলছে, ঘণ্টায় অন্তত ১৪০ কিলোমিটার বেগে ‘ইরমা’ আঘাত হানতে পারে ফ্লোরিডায়। একইসঙ্গে শুরু হতে পারে ভারী বৃষ্টিপাত এবং ভূমিধসও। পশ্চিম উপকূলের দিকে হারিকেনটির গতিপথ হলেও পুরো ফ্লোরিডাকেই সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।
পরিস্থিতি বিবেচনায় ফ্লোরিডার কর্তৃপক্ষ এরইমধ্যে রাজ্যে জরুরি অবস্থা জারি করেছে। বন্ধ করে দিয়েছে স্কুল-কলেজ। বাতিল করেছে দুই হাজারের বেশি ফ্লাইট। এছাড়া নাগরিকদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে তাদের সরে যেতে বলছে নিরাপদ আশ্রয়ে। এখন পর্যন্ত অন্তত ৫৬ লাখ মানুষকে বলা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে। এরইমধ্যে অনেকে সরেও গেছেন বসত-বাড়ি ছেড়ে। হিসাব মতে, প্রায় ৫০ হাজার ফ্লোরিডাবাসী আশ্রয় নিয়েছেন নিরাপদ কেন্দ্রে।
রাজ্যের গভর্নর রিক স্কট নাগরিকদের উদ্দেশে বলেছেন, আপনাদের যদি সরে যেতে বলা হয়, তবে এখনই নিরাপদে চলে যান। আজ রাতেই নয়, এক ঘণ্টার মধ্যেই নয়, এখনই।
এদিকে কিউবান সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার বেগে আছড়ে পড়া ‘ইরমা’র আঘাতে কামাগাই দ্বীপপুঞ্জসহ অনেক এলাকায় ভূমিধস হয়েছে। সারাদেশে প্রাণ গেছে অন্তত ২৪ জনের।
‘প্রাণঘাতী’ ইরমা সর্বপ্রথম গত ৬ সেপ্টেম্বর বিকেলে ক্যারিবিয়ান উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় দ্বীপ বারবুডায় আঘাত হানে। এতে দ্বীপটির ৯০ শতাংশই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। উপড়ে যায় গাছপালা ও ঘরবাড়ির ছাদ, বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় বিদ্যুৎ সংযোগ।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম বলছে, ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের ক্ষতি বিবেচনায় নিয়ে ইরমার আঘাত থেকে বাঁচতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ফ্লোরিডাবাসী। সরকারকে সবরকমের তৎপরতায় সহযোগিতা করছে জনগণ।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৯, ২০১৭
এইচএ/
কিউবায় হারিকেন ‘ইরমা’র তাণ্ডবে ভূমিধস