ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

সীমান্তে বিএসএফের ক্ষমতা বৃদ্ধির বিরোধিতা পশ্চিমবঙ্গে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০২১
সীমান্তে বিএসএফের ক্ষমতা বৃদ্ধির বিরোধিতা পশ্চিমবঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা

কলকাতা: ভারতের একাধিক রাজ্যের সঙ্গে প্রতিবেশী কয়েকটি দেশের সীমান্ত রয়েছে। এসব রাজ্যের সীমান্তে বিএসএফের ক্ষমতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়।

কেন্দ্রীয় সরকারের ওই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সীমান্ত থেকে ভারতের অভ্যন্তরীণ ভূ-সীমানার ১৫ থেকে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিএসএফের ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে পশ্চিমবঙ্গ এবং পঞ্জাব রাজ্য সরকার। এ দুই রাজ্যেই ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি বিরোধীরা।

এ নিয়ে মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে। প্রায় দেড় ঘণ্টার আলোচনা শেষে এ প্রস্তাব পাস হয়। কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তের বিরোধীতায় ১১২টি ভোট এবং পক্ষে ৬৩ ভোট পড়ে। এদিন বিরোধীদল হিসেবে বিজেপির পক্ষে আলোচনায় অংশ নেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীসহ একাধিক বিধায়ক। অপরদিকে শাসক দল অর্থাৎ তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে আলোচনায় অংশ নেন পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়সহ দলের একাধিক বিধায়ক।

পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন,  ‘বিএসএফের ক্ষমতা বাড়ানোর পেছনের ক্ষমতা দখল বা অন্য কোনো চক্রান্ত নেই তো?’ অর্থাৎ একুশের বিধানসভা ভোটে বিজেপির পরাজয় এবং আসন্ন লোকসভা ভোটের আগে কেন্দ্রীয় সরকারের এমন সিদ্ধান্তের পেছনে অন্য কোনো চক্রান্ত আছে বলে মনে করছে তৃণমূল কংগ্রেস।  

সম্প্রতি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, বিএসএফের ক্ষমতা বাড়ানো নিয়ে রাজ্যের কিছু বলা ঠিক নয়। তবে কোনো চক্রান্ত হচ্ছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন তিনি।  

এ নিয়ে বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্য, ‘বিএসএফের সীমান্ত বৃদ্ধি সংক্রান্ত কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত সঠিক। প্রয়োজনে ৮০ কি.মি. পর্যন্ত করা হোক বাহিনীর ক্ষমতা। ’

অপরদিকে, বিএসএফের পরিধি বৃদ্ধির সিদ্ধান্তে কড়া সমালোচনা করেছে পশ্চিমবঙ্গ বিভিন্নক্ষেত্রের বিশিষ্টজনেরা। অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জন্য ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন তারা। পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে এই ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর চাপ বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন তারা।  

সোমবার (১৫ নভেম্বর) কলকাতা প্রেসক্লাবে একটি মানবাধিকার সংগঠনের ডাকা বৈঠকে বিশিষ্ট অভিনেত্রী ও চিত্র পরিচালক অপর্ণা সেন, কলকাতা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মলয় সেনগুপ্ত, মানবাধিকারকর্মী সুজাতা ভদ্র, কিরিটি রায় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। তারা বলেন, বাংলাদেশের সীমান্ত বরাবর কাঁটাতারের বেড়ার জন্য এমনিতেই ওই এলাকার বাসিন্দারা চরম দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছে। তারমধ্যে প্রতিদিন বিএসএফের নির্যাতনের মুখে পড়তে হয় তাদের।

এদিকে, সম্প্রতি বিএসএফের গুলিতে ৩ জনের মৃত্যুর ঘটনায় উত্তপ্ত হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার সিতাই বিধানসভা। ওই বিধানসভার গুঞ্জোরিচওড়া এলাকায় ২৯নং গেটের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছিল ৩জনের মরদেহ। নিহতদের মধ্যে দু’জন বাংলাদেশি এবং একজন ভারতীয়।  


বাংলাদেশ সময়: ০০১০ ঘণ্টা, ১৭ নভেম্বর ২০২১
ভিএস/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।