ইসলামপূর্ব আরবে মানুষ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ত শুধু গোত্রপ্রীতি ও অন্যায় পক্ষপাতের কারণে। বহু বছর ধরে তাদের এসব সংঘাত অব্যাহত থাকত।
ইসলাম আগমনের পূর্বাপর অবস্থার বিবরণ দিয়ে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কোরো : তোমরা ছিলে পরস্পরের শত্রু এবং তিনি তোমাদের হৃদয়ে প্রীতির সঞ্চার করেন। ফলে তাঁর অনুগ্রহে তোমরা পরস্পর ভাই হয়ে গেলে। তোমরা তো অগ্নিকুণ্ডের প্রান্তে ছিলে, আল্লাহ তা থেকে তোমাদের রক্ষা করেন। ’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১০৩)
অন্যায় পক্ষপাত নিষিদ্ধ : পক্ষপাত যদি দ্বিন ও ঈমানের ভিত্তিতে না হয়, তবে তা মানুষকে সত্যবিমুখ করে ফেলে। দ্বিনের জন্য নয়—এমন পক্ষপাতের ব্যাপারে সতর্ক করে মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তোমাদের জাহেলি যুগের মিথ্যা অহংকার ও পূর্বপুরুষদের নিয়ে গর্ব করার প্রথাকে বিলুপ্ত করেছেন। মুমিন হলো আল্লাহভীরু আর পাপী হলো দুর্ভাগা। তোমরা সবাই আদম সন্তান আর আদম (আ.) মাটির তৈরি। লোকদের উচিত বিশেষ গোত্রের ভুক্ত হওয়াকে কেন্দ্র করে অহংকার না করা। এখন তো তারা জাহান্নামের কয়লায় পরিণত হয়েছে। অন্যথায় তোমরা মহান আল্লাহর কাছে ময়লা সেই কীটের চেয়েও জঘন্য গণ্য হবে, যে তার নাক দিয়ে ময়লা ঠেলে নিয়ে যায়। ’ (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৫১১৬)
ঈমানের বন্ধন সব কিছুর ঊর্ধ্বে : অন্যায় পক্ষপাত ও গোত্রপ্রীতির বিপরীতে ইসলামী ভ্রাতৃত্বের শিক্ষা দিয়েছে। মুমিন ঈমানের সম্পর্ককে সব কিছুর ওপরে প্রাধান্য দেয় এবং ঈমান-ইসলামকে সামনে রেখে অন্য সব সংকটের সমাধান করে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘মুমিনরা পরস্পর ভাই ভাই; সুতরাং তোমরা ভাইদের মধ্যে শান্তি স্থাপন কোরো আর আল্লাহকে ভয় কোরো, যাতে অনুগ্রহপ্রাপ্ত হও। ’ (সুরা : হুজরাত, আয়াত : ১০)
ঈমানি বন্ধন আল্লাহর দান : অন্ধ পক্ষপাত থেকে রক্ষার জন্য আল্লাহ মুমিনদের যে ঈমানি বন্ধন দান করেছেন, তা অমূল্য সম্পদ। আল্লাহ বলেন, ‘তিনি তাদের পরস্পরের হৃদয়ের মধ্যে প্রীতি স্থাপন করেছেন। পৃথিবীর যাবতীয় সম্পদ ব্যয় করলেও তুমি তাদের হৃদয়ে প্রীতি স্থাপন করতে পারতে না; কিন্তু আল্লাহ তাদের মধ্যে প্রীতি স্থাপন করেছেন; নিশ্চয়ই তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। ’ (সুরা : আনফাল, আয়াত : ৬৩)
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৪ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০২৪
এমজে