ইসলামের বিধানে অসুস্থ হলে চিকিৎসা নিতে উৎসাহিত করা হয়েছে। অসুস্থতায় চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে এবং তার পরামর্শ মেনে চলতে হবে।
হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলাই রোগ ও ঔষধ সৃষ্টি করেছেন এবং প্রত্যেক রোগের চিকিৎসাও তিনি সৃষ্টি করেছেন। অতএব, তোমরা চিকিৎসা গ্রহণ করো’। (সুনানে আবু দাউদ: ৩৮৬৪)
তবে, একজন মুমিনকে ভরসা করতে হবে আল্লাহর ওপর। কারণ সুস্থ করার মালিক শুধুমাত্র আল্লাহ তাআলা। যদি তিনি না চান, তাহলে ওষুধ খেয়েও আরোগ্য লাভ করা যাবে না। এজন্যই চিকিৎসা গ্রহণ করে একজন সুস্থ হয়, অন্যজন সুস্থ হয় না। দেখা যায়, কেউ ওষুধ খেয়ে উপকৃত হয়, কেউ হয় ক্ষতিগ্রস্ত।
এতেই প্রমাণ হয়, সবকিছু আল্লাহর ইচ্ছাধীন। আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাসের জায়গা থেকে মুমিন তার দয়া ও অনুগ্রহ কামনা করবে। চিকিৎসা ও উপায়-অবলম্বনের পর সে দোয়া করবে, ‘হে আল্লাহ! বাহ্যত আমার যা করার ছিল তা আমি করেছি। কিন্তু আমার উদ্দেশ্য অর্জন ও প্রয়োজন পূরণ পুরোটাই আপনার ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে’। এ ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ (সা.) একটি সুন্দর দোয়া শিখিয়েছেন।
দোয়াটি হলো-
উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা হাজাদ-দোয়াউ ওয়া আলাইকাল ইজাবাতু, হাজাল জুহদু ওয়া আলাইকাত তুকলান’।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! ‘এটা আমার প্রার্থনা, এটা কবুল করা আপনার ইচ্ছাধীন, এটা আমার প্রচেষ্টা, এর সাফল্য আপনার ওপর নির্ভরশীল’। (সুনানে তিরমিজি: ৩৪১৯)
সুতরাং, অসুস্থ হলে চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। একইসঙ্গে সুস্থতার জন্য আল্লাহর ওপর ভরসা করতে হবে।
হাদিসের ভাষ্য- ‘...যখন রোগ অনুযায়ী চিকিৎসা করা হয় তখন আল্লাহ তাআলার হুকুমে আরোগ্য লাভ হয়’। (সহিহ মুসলিম: ৫৬৯৭)
অনেকে প্রশ্ন করেন, চিকিৎসা নেওয়া কি তাওয়াক্কুলবিরোধী কাজ নয়? এর উত্তর হলো- ‘না’। হাদিসে এসেছে, ‘রাসূলুল্লাহ এক আহত ব্যক্তিকে দেখতে গেলেন। দেখে বললেন, তার জন্য অমুক গোত্রের চিকিৎসককে ডেকে আনো। (মুসনাদে আহমদ: ৫/৩৭১)
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আববাস (রা.) বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (সা.) শিঙা লাগিয়েছেন এবং নাকে বিশেষ ঔষধ দিয়েছেন যেন হাঁচির মাধ্যমে রোগ সেরে যায়’। (সহিহ বুখারি: ৫৬৯১)
ইয়া আল্লাহ! মুসলিম উম্মাহকে অসুস্থতার সময় হাদিসের নির্দেশনা অনুযায়ী যথাযথ চিকিৎসা গ্রহণের তাওফিক দান করুন এবং আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৫ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০২৪
জেএইচ