ইথিওপিয়ার একটি মসজিদ। খুবই সাধারণ।
এই মসজিদের সৌন্দর্য লুকিয়ে রয়েছে এর নির্মাণ সরলতায়। একটি কাঠের মসজিদ। কিন্তু তাতে উদ্যোক্তা ও নির্মাতাদের বড় মনেরই পরিচয় পাওয়া যায়। এর নির্মাতারা যেন বলতে চাইছে, সাধ্য থাকলে হৃদয়ের সবটুকু উজাড় করে দিতাম। নাই তো কী? যা আছে তাই দিলাম।
সাধারণত বিশ্বের বিভিন্ন ঐতিহাসিক বড় মসজিদ, দৃষ্টিনন্দন স্থাপনার মসজিদ নিয়ে মানুষের আগ্রহ থাকে। কিন্তু অজানা কারণে এই কাঠের মসজিদটিও মানুষের আগ্রহ সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে।
ইসলাম বিষয়ক ওয়েবসাইট ইলমফিড.কম এই মসজিদ নিয়ে একটি প্রকাশিত প্রতিবেদনের শিরোনাম করেছে- This Mosque’s Beauty is in its Simplicity.
যথার্থই বলা চলে, এই মসজিদের সৌন্দর্য, এর সরলতায় নিহিত। ধর্মীয় সব নিয়ম ও রীতি মেনেই নির্মিত হয়েছে মসজিদটি। রয়েছে এ মসজিদের একটি মেহরাব ও মিম্বরও।
আলোচিত মসজিদটি ইথিওপিয়ার সর্বনিম্ন এলাকা দানাকিল (Danakil) (সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১২৫ মিটার নিচে) এর এ্যাসাইটায় (Asaita) অবস্থিত।
মসজিদটি সম্পূর্ণরূপে কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। কাঠ বলতে আসলে বিভিন্ন গাছের ডালপালা। মসজিদের পাশে নির্মাণ করা হয়েছে একটি মিনার। মিনারে ব্যবহার করা হয়েছে লম্বা গাছের ডাল। আর মিনারের ভিত্তি স্থাপন করা হয়েছে বড় বড় পাথর দিয়ে। কিছু পাথর মূল মসজিদের দেয়ালেও ব্যবহার করা হয়েছে ভারসাম্য রক্ষার কাজে।
ইথিওপিয়ার ক্ষুদ্র যাযাবর গোষ্ঠী আমারা সম্প্রদায়ের লোকেরা মসজিদটি নির্মাণ করেছে। মসজিদটিতে একসঙ্গে ৩০ জন মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারে।
উল্লেখ্য যে, ইথিওপিয়া আফ্রিকা মহাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একটি প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র। উচু পর্বত আর মরুভূমি দিয়ে গড়া এই রুক্ষ দেশটিতে প্রায় ৭০টিরও বেশি জাতিগত ও ভাষাগত গোষ্ঠীর মানুষের বাস।
আদ্দিস আবাবা ইথিওপিয়ার রাজধানী ও বৃহত্তম শহর। দেশটিকে মুসলমানের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ৩৪ ভাগ।
আসলে মসজিদ যে শুধু ইট,পাথর, চুন, সুরকি, দিয়ে গড়তে হবে তা আবশ্যক নয়। আবশ্যক ইবাদতের জন্য সুন্দর ও পবিত্র মন-মানসিকতা তৈরি। মসজিদ তো একটি উপলক্ষ্য মাত্র। আর সেটাই প্রমাণ করলো ক্ষুদ্র যাযাবর গোষ্ঠী আমারা সম্প্রদায়ের লোকেরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৪ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০১৬
এমএ/