ইসলামের দ্বিতীয় স্তম্ভ নামাজ। ইমানের পর নামাজের চেয়ে গুরুত্ব অন্য কোনো ইবাদতে প্রদান করা হয়নি।
আর নামাজের ব্যাপারে যারা উদাসীন থাকে তাদের ব্যাপারে শাস্তির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আল্লাহতায়ালা বলেন, 'দুর্ভোগ সেসব নামাজির জন্য নিজেদের নামাজের ব্যাপারে যারা থাকে গাফেল। ' -সূরা মাউন : ৪-৫
রোজ হাশরে নামাজের মাধ্যমেই হিসাব-নিকাশ শুরু হবে। যার নামাজ সঠিক হবে তার অন্যান্য আমলও সঠিক বলে বিবেচিত হবে। আর যার নামাজ অসুন্দর হবে তার অন্যান্য আমলও অসুন্দর বলে গণ্য হবে। তাই প্রত্যেক মুসলমানের উচিৎ গুরুত্ব সহকারে নামাজ আদায়ে সচেষ্ট হওয়া।
যে ব্যক্তি নামাজের ব্যাপারে অলসতা করে তাকে ১৫ ধরনের শাস্তি দেওয়া হবে। তার মধ্য থেকে পাঁচ ধরনের শাস্তি দুনিয়াতে। তিন ধরনের শাস্তি মৃত্যুর সময়। তিন ধরনের শাস্তি কবরে। চার ধরনের শাস্তি কবর থেকে উঠানোর পর।
দুনিয়াতে যে পাঁচ ধরনের শাস্তি হবে তা হলো-
১. তার জীবনের বরকত ছিনিয়ে নেওয়া হবে।
২. তার চেহারা থেকে নেককারের নূর দূর করে দেওয়া হবে।
৩. তার নেক কাজের কোনো বদলা দেওয়া হবে না।
৪. তার কোনো দোয়া কবুল হবে না।
৫. নেক বান্দাদের দোয়ার মধ্যে তার কোনো হক থাকবে না।
মৃত্যুর সময় যে তিন ধরনের শাস্তি দেওয়া হবে-
১. জিল্লতি ও অপমানের সঙ্গে সে মৃত্যুবরণ করবে।
২. ক্ষুধার্ত অবস্থায় সে মৃত্যুবরণ করবে।
৩. এমন পিপাসার্ত অবস্থায় সে মৃত্যুবরণ করবে যে, সমুদ্র পরিমাণ পানি পান করালেও তার পিপাসা মিটবে না।
কবরে যে তিন ধরনের শাস্তি হবে সেগুলো হলো-
১. কবর তার জন্য খুব সংকীর্ণ হয়ে যাবে। এমন সংকীর্ণ যে, এক পাশের বুকের হাড় আরেক পাশে ঢুকে যাবে।
২. তার কবরে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হবে।
৩. তার কবরে এমন একটি সাপ নিযুক্ত করা হবে, যে সাপের চোখ হবে আগুনের, নখগুলো হবে লোহার। তার প্রত্যেকটি নখ লম্বা হবে একদিনের দূরত্বের পথ। ওই সাপের আওয়াজ হবে বজ্রের আওয়াজের মতো বিকট। সাপ ওই বেনামাজিকে বলতে থাকবে, আমাকে আমার রব তোমার জন্য নিযুক্ত করেছেন; যাতে ফজরের নামাজ নষ্ট করার কারণে সূর্যোদয় পর্যন্ত দংশন করতে থাকি। জোহরের নামাজ নষ্ট করার কারণে আসর পর্যন্ত দংশন করতে থাকি। আসরের নামাজ নষ্ট করার কারণে মাগরিব পর্যন্ত আর মাগরিবের নামাজ নষ্ট করার কারণে এশা পর্যন্ত, আর এশার নামাজ নষ্ট করার কারণে ফজর পর্যন্ত দংশন করতে থাকি। এ সাপ দংশন করার সঙ্গে সঙ্গে সে ৭০ হাত মাটির নিচে ঢুকে যাবে (উঠিয়ে আবার দংশন করবে) এভাবে কেয়ামত পর্যন্ত এই সাপ তাকে আজাব দিতে থাকবে।
কবর থেকে উঠানোর পর বেনামাজিকে যে চার ধরনের আজাব দেওয়া হবে-
১. তার হিসাব খুব কঠিনভাবে নেওয়া হবে।
২. আল্লাহতায়ালা তার ওপর অসন্তুষ্ট হয়ে থাকবেন।
৩. তাকে জাহান্নামে দেওয়া হবে।
৪. তার চেহারায় তিনটি লাইন লেখা থাকবে-
১. হে আল্লাহর হক নষ্টকারী!
২. হে আল্লাহর গোস্বায় পতিত ব্যক্তি!
৩. তুমি দুনিয়াতে যেমন আল্লাহর হক নষ্ট করেছিলে তেমনি আজ আল্লাহর রহমত থেকে তুমি নিরাশ। এভাবে বেনামাজিকে ১৫ ধরনের শাস্তি দেওয়া হবে।
আল্লাহতায়ালা সবাইকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ যথাযথভাবে আদায় করার তওফিক দান করুন। আমিন।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৬
এমএ/