ঢাকা, শুক্রবার, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

ইসলামের ছায়ায় মোহাম্মদ আলীর জীবন

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩২ ঘণ্টা, জুন ৪, ২০১৬
ইসলামের ছায়ায় মোহাম্মদ আলীর জীবন

যে কোনো লড়াইয়ে জয়ের আনন্দ ছাপিয়ে কেউ এমন ঘোষণা দেয়নি, ‘আমিই সেরা, আমিই সম্রাট’। তবে ক্রীড়াঙ্গনের একজন এমন ঘোষণা দিয়েছিলেন।

তিনি হলেন মোহাম্মদ আলী। ১৯৬৪ সালে সনি লিস্টনকে হারিয়ে তিনি নিজেই ঘোষণা করেছিলেন, ‘আমিই বিশ্বের সম্রাট’।

তিনি শুধু মুষ্টিযুদ্ধেই নয়, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ক্রীড়াবিদদের একজন। জীবনের পরতে পরতে রিংয়ের ভেতরে-বাইরে যে কৃতিত্ব স্থাপন করেছেন, তা তার আগে বা তার পরেও দেখা যায়নি। এটাই তার জীবনের বৈচিত্র্যের অংশবিশেষ।

তবে মোহাম্মাদ আলী এ নামে জন্মগ্রহণ করেননি। ১৯৪২ সালের ১৭ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের কেন্টাকির লুইসভিলে জন্মগ্রহণ করেন, তখন তার নাম ছিল ক্যাসিয়াস মারসেলাস ক্লে। ক্যাসিয়াস (সিনিয়র) এবং ওডেসার প্রথম ছেলে ছিলেন তিনি। তার পিতা ছিলেন পেইন্টার। মোহাম্মদ আলী ইসলাম গ্রহণের পর তার ছোট ভাই রুডলফও মুসলমান হন। তার নাম হয় রহমান আলী। আলীর মেয়ে লায়লা আলী পরবর্তীকালে মুষ্টিযুদ্ধে সুনাম অর্জন করেন।

সনি লিস্টনকে হারিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়ে তিনি তার শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি পান। এর দুই দিন পর বিশ্ব অবাক হয়ে আরেকটি খবর শুনল। লিস্টনকে হারানোর চেয়েও এটি ছিল চাঞ্চল্যকর। খবরটি হলো তিনি শান্তির ধর্ম ইসলাম গ্রহণ করেছেন এবং নতুন নাম নিয়েছেন মোহাম্মদ আলী।   এটি ১৯৭৫ সালের ঘটনা।

ইসলাম ধর্ম গ্রহণের মধ্য দিয়ে নতুন এক কিংবদন্তির জন্ম হয়। আলী তার ক্যাসিয়াস ক্লে নামকে অভিহিত করলেন, ‘দাসত্ব নাম’ হিসেবে। বিশ্বক্রীড়াঙ্গনে একটি স্থায়ী পরিবর্তনের সূচনা হয় এভাবেই। প্রথমে তিনি এলিজা মোহাম্মদ ও ম্যালকম এক্সের নেতৃত্বাধীন ‘ন্যাশন অব ইসলামের’ সঙ্গে জড়িয়েছিলেন। তবে পরবর্তীকালে তিনি তাদের সংশ্রব ত্যাগ করেন। তিনি পবিত্র কোরআন অধ্যায়ন করতে থাকেন, সুন্নি ইসলামের অনুসারীতে পরিণত হন।

মোহাম্মদ আলী জীবনে নানা ঘাত-প্রতিঘাত সহ্য করেছেন। তবে তিনি সাদা কালো, ধর্ম, বর্ণ-নির্বিশেষে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ছিলেন। প্রচুর দেশ ভ্রমণ করেছেন, এসেছেন বাংলাদেশেও।

৭৪ বছর বয়সী এই মহানায়কের জীবনকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়।

এক. মুষ্টিযুদ্ধে অংশগ্রহণ থেকে শুরু করে অলিম্পিক স্বর্ণলাভ এবং হেভিওয়েট শিরোপা বিজয়।

দুই. মানবতাবাদীরূপে আত্মপ্রকাশ। এ সময়ে তিনি আফ্রিকা জয় করেছেন, ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হয়েছেন, মার্কিন আগ্রাসন বিরোধী ভূমিকায় নেমে সর্বগ্রাসী শক্তির বিরুদ্ধে লড়েছেন।

তিন. হারানো সম্মান পুনরুদ্ধার করেছেন, এক নতুন যোদ্ধা হিসেবে আত্মপ্রকাশ ও বিশ্ব নাগরিকের দায়িত্ব পালন। অবসরের পর তিনি জীবনকে মানবতার কল্যাণে উৎসর্গ করেছিলেন। বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি নিরলসভাবে কাজ করেছেন আমৃত্যু।

তার প্রতি রইল আমাদের বিনম্র শ্রদ্ধা। কামনা করি, তিনি পরকালেও সুখে থাকবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৫ ঘণ্টা, জুন ০৪, ২০১৬
এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।