সকাল হলেই পার্কে বা মাঠে দৌড়াতে বের হন? হঠাৎ করে কানে আসে কারা যেন উচ্চস্বরে হেসে উঠলেন। প্রথমটায় চমকে গেলেও, এখন দিব্যি মানিয়ে নিয়েছেন এই হাসির কলরবে।
কেন এতদিন রামগরুড়ের ছানার মতো আপনার হাসতে মানা ছিল, সেটা ভেবেও হাসতে পারেন। তবে হাসুন। আপনার মনে প্রশ্ন আসতেই পারে, কেন হাসবেন? কারণ তো কিছু আছে। তো দেখে নেওয়া যাক, কি কি কারণে আপনাদের হাসা একান্তভাবে দরকার।
আজকাল কটা মানুষ ভাবুন তো মন খুলে হাসেন? সবাই তো মেপে হাসেন। কারণ, মন খুলে যারা হাসে, তাঁদের নাকি আবার কোনও ব্যক্তিত্ব নেই। তাই হাসির খোরাক হতে আপনারাও চান না। ফলে লোকের সঙ্গে দেখা হলে ঠোঁটে মিথ্যা হাসি ফুটিয়ে সৌজন্য বিনিময়ই নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনটা করলে কিন্তু আপনার শরীর এইসব সুফলগুলি পাবে না।
হাসির কতগুলো প্রধান উপকারিতা হচ্ছে:
মানসিক চাপ দূর করে
হাসলে শরীরে স্ট্রেস হরমোনের (কর্টিসল) নিঃসরণ কমতে থাকে, ফলে স্ট্রেস বা মানসিক চাপ কম হয়। হাসিতে উৎকণ্ঠা ও উদ্বিগ্নতা কমে।
ব্যথা কমায়
হাসি, বিশেষ করে অট্টহাসি এন্ডোরফিন নামক রাসায়নিক পদার্থের নিঃসরণ ঘটায়, যা আমাদের ব্যথার অনুভূতি কমায়।
রাগ নিয়ন্ত্রণ করে
রাগ নিয়ন্ত্রণের অন্যতম উপায় হচ্ছে হাসার অভ্যাস করা। যত বেশি হাসবেন, তত বেশি রাগ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা তৈরি হবে।
রোগ প্রতিরোধ করে
হাসি রোগ প্রতিরোধক শ্বেতরক্তকণিকার উৎপাদন বাড়ায়, যা রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
অকালে বুড়োবেন না
হাসলে মুখের মাংসপেশির ব্যায়াম হয়ে যায়। ফলে যাঁরা নিয়মিত হাসেন, তাঁদের মুখে বার্ধক্যের ছাপ পড়ে না।
চিন্তাভাবনাকে শাণিত করে
হাসলে ফুসফুসে আর মস্তিষ্কে অক্সিজেনের প্রবাহ বাড়ে, ফলে চিন্তাভাবনাগুলো অনেক শাণিত হয়। বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চাগুলো সুসংহত হয়।
সম্পর্কের উন্নতি ঘটে
একাধিক মানুষ যখন একসঙ্গে হাসে, তখন তাদের মধ্যে একটা কার্যকরী যোগাযোগ তৈরি হয়, পারস্পরিক সম্পর্কের উন্নতি ঘটে।
আত্মবিশ্বাস বাড়ায়
হাসলে যোগাযোগদক্ষতা বাড়ে, তাতে আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়।
ইতিবাচকভাবে ভাবায়
হাসি নেতিবাচক চিন্তা আর আচরণ থেকে দূরে রাখে, মানুষকে ইতিবাচক করে তোলে।
মনে আনে নতুন শক্তি
হাসির মধ্য দিয়ে ক্লান্তি, অবসাদ দূর হয়।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
হাসি উচ্চ রক্তচাপ কমায়; যা হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
ওজন কমায়
প্রতিদিন ১৫ মিনিট হাসলে প্রায় ৪০ ক্যালরি শক্তি পোড়ে, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে।
কাজের মান বাড়ায়
হাসলে টিমওয়ার্ক ভালো হয়, তাতে কর্মক্ষেত্রে কাজের মান বেড়ে যায়। টিমের বা দলের সদস্যদের সঙ্গে দূরত্ব কম হয়।
আয়ু বাড়ায়
নরওয়েতে এক গবেষণায় দেখা গেছে, হাসি মানুষকে দীর্ঘায়ু করে!
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০২, ২০২৩
এএটি