ঢাকা, মঙ্গলবার, ১ মাঘ ১৪৩১, ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১৩ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

অর্থ-স্বর্ণালঙ্কার হাতিয়ে নিতে খুন করা হয় বৃদ্ধ দম্পতিকে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০২৩
অর্থ-স্বর্ণালঙ্কার হাতিয়ে নিতে খুন করা হয় বৃদ্ধ দম্পতিকে

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে নিজ বসতঘরে নিঃসন্তান বৃদ্ধ দম্পতি হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছয় আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

 

মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে পুলিশ সুপার মো. মাহফুজ্জামান আশরাফ প্রেস বিফ্রিংয়ে এ তথ্য জানান।

গ্রেফতাররা হলেন- রুবেল, কামরুল হাসান, জুয়েল, কাউছার হোসেন, ও আবুল কাশেম খোকন দুদু। এরা সবাই জেলার সদর উপজেলার শাকচর এলাকার বাসিন্দা।

গত বছরের ১৫ অক্টোবর রাতে জেলার সদর উপজেলার শাকচরের ছই মিঝি বাড়ির নিজ বসতঘর থেকে অর্ধগলিত এক বৃদ্ধ দম্পতির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।  

পুলিশ জানিয়েছেন, স্বর্ণলঙ্কার ও নগদ টাকা চুরির উদ্দেশ্যে ঘরে ঢুকে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে আসামিরা স্বীকার করেছে। গ্রেফতারকৃত আসামি কামরুল হাসান খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে।  

এদিকে এ ঘটনায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে জেলহাজতে আটক ওই দম্পতির দত্তক ছেলের অব্যাহতি চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়েছে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ জানায়, আসামি কামরুল হাসান ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। তিনি বৃদ্ধ আবু ছিদ্দিক ও আতরনেছা দম্পতির বাড়িতে ইলেকট্রিক কাজ করতো। ওই বাড়ির বাসিন্দা আবুল হোসেন খোকন দুদু ইলেকট্রিক মিস্ত্রি কামরুলে জানায়- তার ভাতিজা গিয়াস উদ্দিনের কাছে বৃদ্ধ দম্পতি কিছু সম্পত্তি বিক্রি করেছে। সম্পত্তি বিক্রির টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার আবু ছিদ্দিকের ঘরে আছে।  

পরে দুদুর কথা মতো কামরুল তার বন্ধু বাহার, রুবেল, জুয়েল ও কাউছারকে নিয়ে ওই বাড়িতে রাতে চুরির প্রস্তুতি নেয়। গত ১৫ অক্টোবর রাতে কামরুল, রুবেল ও বাহার জানালার গ্রিল বেয়ে আবু ছিদ্দিকের ভবনের ছাদে উঠে ভেতরে প্রবেশ করে। এসময় তারা আবু ছিদ্দিক ও তার স্ত্রী আতরনেছার মুখ চেপে ধরে এবং কাপড় দিয়ে আবু ছিদ্দিকের হাত-পা বেঁধে ফেলে। এক পর্যায়ে বৃদ্ধ দম্পতির মৃত্যু হয়। তারা ঘরের আলমারিসহ বিভিন্নস্থানে খোঁজা-খুঁজি করে কোনো কিছু না পেয়ে ছাদের ওপর দিয়ে বেরিয়ে যায়। পরে তারা আত্মগোপনে চলে যায়।  

ঘটনার দুইদিন ওর ১৭ অক্টোবর রাতে বৃদ্ধ এ দম্পতির অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তাদের কোনো সন্তান না থাকায় আবদুর রহমান নামে একজনকে লালনপালন করেছেন। হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে পুলিশ তাদের পালক ছেলে আবদুর রহিমকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।  

গত ৯ জানুয়ারি (সোমবার) রাতে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয় ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী কামরুল হাসান। জেলা শহরের মাদাম এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করলে জড়িত অন্য চারজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। এ ঘটনায় এক আসামি মাদক মামলায় কক্সবাজার জেলা কারাগারে বন্দি রয়েছে।  

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিন জানান, জোড়া খুনের ঘটনায় সব আসামিকেই গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।  

প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সোহেল রানা, সহকারী পুলিশ সুপার (রামগতি সার্কেল) সাইফুল আলম চৌধুরীসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।  

** তালাবদ্ধ ঘরে পড়েছিল বৃদ্ধ দম্পতির গলিত লাশ!

বাংলাদেশ সময়: ১৮২২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।