ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

জাজিরায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৬

২৬ ঘণ্টা নির্ঘুম ছিলেন চালক

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২৩
২৬ ঘণ্টা নির্ঘুম ছিলেন চালক

শরীয়তপুর: শরীয়তপুরের জাজিরায় পদ্মাসেতুর টোল প্লাজার সংলগ্ন সড়কে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাণ অ্যাম্বুলেন্স চালক-রোগীসহ ৬ জন।  

মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) ভোর ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, অ্যাম্বুলেন্সের চালক রবিউল ইসলাম (২৮) টানা ২৬ ঘণ্টা গাড়ি চালিয়ে ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।

মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে শিবচর হাইওয়ে থানার পরিদর্শক আবু নাঈম মোহাম্মদ মোফাজ্জেল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।  

তিনি জানান, পদ্মাসেতুর জাজিরা প্রান্তের টোল প্লাজার ২০০ থেকে ৩০০ মিটার সামনে ভোরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। অ্যাম্বুলেন্সের চালক রবিউল টানা ২৬ ঘণ্টা ডিউটিতে ছিলেন। এ কারণে তিনি ক্লান্ত ছিলেন। সম্ভবত গাড়ি চালাতে চালাতে তিনি ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। এ কারণে চলন্ত ট্রাককে পেছন থেকে ধাক্কা দেয় অ্যাম্বুলেন্সটি। সঙ্গে সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সটি ট্রাকের নিচে চলে যায়। ঘটনাস্থলেই চালকসহ গাড়িতে থাকা ছয়জন প্রাণ হারান।
পরে লাশগুলো উদ্ধার করে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়।  

নিহতরা হলেন- জাহানারা বেগম (৫৫), স্বাস্থ্যকর্মী ফজলে রাব্বি (২৮), রোগীর মেয়ে লুৎফুন নাহার লিমা(৩০), গাড়ির হেল্পার জ্বিলানী (২৬), গাড়ি চালক রবিউল ইসলাম(২৮) ও সাংবাদিক মাসুদ রানা (৩০)।

অ্যাম্বুলেন্সের চালক রবিউলের ভাই ইয়াছিন হাওলাদার বলেন, আমরা দুই ভাই অ্যাম্বুলেন্স চালক। রবিউল রোববার (১৫ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ২টার দিকে ঢাকা থেকে রোগী নিয়ে ভোলায় যান। ভোলা থেকে ফেরার পথে তিনি বরিশাল শহর থেকে সোমবার (১৬ জানুয়ারি) আরেক রোগীকে নিয়ে ঢাকায় যান। ফেরার পথে পদ্মাসেতু এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় পড়েন।

রবিউলের শাশুড়ি রাণী বেগম বলেন, আমার মেয়ে সন্তানসম্ভবা। পাঁচ বছর বয়সী একটা ছেলে আছে। আমি এখন ওদের দায়িত্ব কার কাছে দেব?

নিহত মা ও মেয়ের বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার আনারসিয়া গ্রামে। জাহানারার স্বামী লতিফ মল্লিক যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। ফজলে রাব্বির বাড়িও একই গ্রামে । সাংবাদিক মাসুদ রানার বাড়ি বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বাসাইল গ্রামে। আর রবিউলের সহকারী জিলানির বাড়ি মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর গ্রামে।

জাজিরা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন মাস্টার এনামুল হক সুমন বলেন, খবর পেয়ে লাশ ও গাড়ি উদ্ধার করেছি। লাশগুলো উদ্ধার করে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসি।

পদ্মাসেতু দক্ষিণ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সুরুজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, হঠাৎ করেই থানার পাশে বিকট শব্দ ও চিৎকার শুনে উঠে দেখি ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। অ্যাম্বুলেন্সে থাকা ৬ জনই ঘটনাস্থলে নিহত হয়েছেন। পরে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিয়ে এনে তাদের নিয়ে গাড়ি ও লাশগুলো আমরা উদ্ধার করি।

হাইওয়ে ফরিদপুর সার্কেল এএসপি মো. মারুফ হাসান বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ফায়ার সার্ভিস ও দক্ষিণ থানা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে লাশগুলো উদ্ধার করে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এসে সুরতহাল করেছি। নিহতদের স্বজনদের খবর দেওয়া হয়েছে এখান থেকেই সজনদের হাতে লাশ তুলে দেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২৩
জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।