ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ফ্রি ফায়ার গেম নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে বন্ধুকে খুন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০২৩
ফ্রি ফায়ার গেম নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে বন্ধুকে খুন

বাগেরহাট: বাগেরহাটের মোল্লাহাটে কিশোর ভ্যানচালক সাব্বির শেখ (১৫) হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) বাগেরহাট।  

হত্যার সঙ্গে জড়িত একমাত্র আসামি গ্যারেজ মেকানিক মো. ফেরদৌসকে (১৭) গ্রেফতার করেছে পিবিআই।

অ্যান্ড্রয়েড ফোনে ফ্রি ফায়ার খেলার দ্বন্দ্বে ফেরদৌস তার বন্ধু সাব্বিরকে হত্যা করেছে।  

মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে পিবিআই বাগেরহাট কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এতথ্য জানানো হয়।

গ্রেফতার ফেরদৌস বাগেরহাট সদর থানার ডিংসাইপাড়া এলাকার মো. মনিরুল শেখের ছেলে। মোল্লাহাট উপজেলার ছোট কাচনা এলাকায় ভ্যান রিকশা ও সাইকেল মেরামতের গ্যারেজ রয়েছে তার।

হত্যার শিকার সাব্বির শেখ খুলনা জেলার তেরখাদা উপজেলার কুশলা গ্রামের শেখ বোরহানের ছেলে। সে তেরখাদা ও মোল্লাহাটের ছোট কাচনাসহ বিভিন্ন এলাকায় ভ্যান চালাত।

পিবিআই বাগেরহাটের পুলিশ সুপার মো. আব্দুর রহমান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্যারেজ মেকানিক ফেরদৌস ভ্যান চালক সাব্বির শেখকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছে। প্রয়োজনীয় আইনি প্রক্রিয়া শেষে ফেরদৌসকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।

জিজ্ঞাসাবাদে ফেরদৌস পিবিআইকে জানায়, হত্যার শিকার ভ্যানচালক সাব্বির শেখ  ও গ্রেফতার গ্যারেজ মেকানিক ফেরদৌস ভালো বন্ধু ছিল। তারা দুইজনে এক সঙ্গে ফ্রি ফায়ার গেম খেলত। কোনো একদিন ফেরদৌসের সঙ্গে গেম খেলে হেরে যায় সাব্বির। তখন সাব্বির ফেরদৌসকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। ফেরদৌস এই গালিগালাজের প্রতিশোধ হিসেবে সাব্বিরের ভ্যান বিক্রি করে দেওয়ার কথা চিন্তা করে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ০৯ জানুয়ারি বিকেল পৌনে ৩টার সময় বায়জিদ নামে একটি শিশুর মাধ্যমে সাব্বিরকে ডেকে আনে ফেরদৌস। পরে নিজের গ্যারেজের পেছনে থাকা কক্ষের একটি খাটের ওপর বসে দুইজন ফ্রি ফায়ার গেম খেলা শুরু করে। গেম খেলার একপর্যায়ে ফেরদৌস পেছন থেকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে সাব্বিরকে হত্যা করে। পরে খাটের পাশে সাব্বিরের মরদেহ কম্বল দিয়ে ঢেকে রাখে। এর পর ফেরদৌস সাব্বিরের ভ্যানটি কেটে ভাঙ্গারি হিসেবে বিক্রি করে দেয়। ভ্যানের চারটি ব্যাটারিও স্থানীয় একটি দোকানে বিক্রি করে দেয়। ওই রাতেই গ্যারেজের পার্শ্ববর্তী শেখ ওবায়দুর রহমানের গোডাউনের নিচে সাব্বিরের মরদেহ ফেলে নারায়ণগঞ্জ পালিয়ে যায় ফেরদৌস। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রোববার (৩০ জানুয়ারি) বিকেলে বাগেরহাট পিবিআই, নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও থানার মেঘনা ব্রিজ এলাকা থেকে ফেরদৌসকে গ্রেফতার করে।

এর আগে নিখোঁজের দুই দিন পরে ১১ জানুয়ারি তেরখাদা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন সাব্বির শেখের বাবা শেখ বোরহান। ১৭ জানুয়ারি ছোট কাচনার শেখ ওবায়দুর রহমানের গোডাউনের নিচ থেকে শেখ সাব্বিরের গলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সাব্বিরের বাবা পরনের কাপড় দেখে মরদেহ শনাক্ত করেন। পরে ২৩ জানুয়ারি তেরখাদা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন সাব্বিরের বাবা শেখ বোরহান। পরবর্তীতে মামলাটি পিবিআই তদন্ত শুরু করে। এক সপ্তাহের মধ্যে হত্যার রহস্য উদঘাটন ও হত্যাকারীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পিবিআই।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।