ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

নারী নির্যাতন মামলায় পৌর কাউন্সিলর গ্রেফতার

  ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৩
নারী নির্যাতন মামলায় পৌর কাউন্সিলর গ্রেফতার গ্রেফতার মাহাবুব আলম পলাশ

রাজবাড়ী: রাজবাড়ীতে সৈয়দা সামসুন্নাহার (৪৫) নামে এক বিধবা ও তার মেয়ের ওপর নির্যাতনের মামলায় রাজবাড়ী পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাহাবুব আলম পলাশকে (৪৩) গ্রেফতার করে আদালতে পাঠিয়েছে সদর থানা পুলিশ।  

সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাতে পৌর এলাকা থেকে পুলিশ কাউন্সিলর পলাশকে গ্রেফতার করা হয়।

পলাশ রাজবাড়ী পৌরসভা ৮ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার মৃত কুটি মিয়ার ছেলে।

নির্যাতনের শিকার ও মামলার বাদী সৈয়দা সামসুন্নাহার রাজবাড়ী শহরের বিনোদপুর নিউ কলোনি এলাকার মৃত ফজলুর রহমানের স্ত্রী।

সামসুন্নাহারের অভিযোগ, পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাহাবুব আলম পলাশ ও তার সহযোগী নতুনপাড়া এলাকার মো. বাবুসহ (৪৩) অজ্ঞাতনামা চার/পাঁচজন দীর্ঘদিন ধরে আমার বড় মেয়ে জান্নাতুল ফাতেমাকে কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছে। আমার মেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের ছাত্রী। কু-প্রস্তাবে রাজি না হলে তারা মেয়েসহ আমাকে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে আসছে। আমার স্বামী ২০২০ সালে মারা যাওয়ার পরে আমি আমার তিন মেয়েকে নিয়ে বিনোদপুর নিউ কলোনি রেলের কোয়ার্টারে অতি কষ্টে অসহায়ভাবে বসবাস করি। আমার কোনো উপার্জনের উৎস না থাকায় নিজের সন্তানদের ভবিষ্যতের জন্য আমি ২১/০৯/২০২২ তারিখে বিনোদপুর নিউ কলোনি মোড়ে জাহাঙ্গীরের চায়ের দোকানের পশ্চিম পাশে জেএল নম্বর-১১১, দাগ নম্বর-১২০১, ১২০৩ এ ৩৬০ বর্গফুট জায়গা বাংলাদেশ রেলওয়ে থেকে লিজ নিয়ে সেখানে বৈধভাবে দোকানঘর নির্মাণ করার কাজ করছি। গত সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কাউন্সিলর পলাশ ও তার সহযোগীরা বাঁশের লাঠি, লোহার রড, হকি স্টিক, কাঠের বাটাম নিয়া আমার লিজকৃত জমিতে অনধিকার প্রবেশ করে দোকানঘর নির্মাণকারী শ্রমিকদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ মারধর করে আমাকে জমি থেকে জোর করে বের করে দেয়। আমি ও আমার বড় মেয়ে জান্নাতুল ফাতেমা ঘটনা জানতে পেরে ঘটনাস্থলে পৌঁছে কাজে বাধা দিতে নিষেধ করলে তারা আমাদের এলোপাতাড়ি মারধর করে।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, কাউন্সিলর পলাশ আমার বড় মেয়ের পরনের কাপড় টানা হেঁচড়া করে প্রায় বিবস্ত্র করে হয়রানি করে। কাউন্সিলর পলাশ ও তার সহযোগী বাবু অসৎ উদ্দেশ্যে আমার মেয়ের শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়। আমি মেয়েকে বাঁচাতে গেলে বাবু ওরফে ঢাকাইলা বাবু আমার চুলের মুঠি ধরে মারধর করে বিবস্ত্র করে। আমাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে কাউন্সিলর পলাশ ও তার সহযোগীরা আমাদের খুন জখমের হুমকি দিয়ে চলে যায়। পরে আমি রাজবাড়ী সদর থানায় একটি এজাহার করি। সদর থানা পুলিশ কাউন্সিলর পলাশকে গ্রেফতার করে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।

রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন সাংবাদিকদের জানান, এ বিষয়ে রাজবাড়ী সদর থানার একটি মামলা হয়েছে (মামলা নম্বর ৩২, তারিখ ২০/২/২৩)। ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ( সংশোধনী) ২০০৩ এর ১৪৩/৪৪৭/৩২৩/৫০৬(২)/১১৪ পেনাল কোড ১৮৬০ মামলা করা হয়েছে। গ্রেফতার মাহাবুব আলম পলাশকে মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) আদালতে পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।