ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ছিনতাইয়ে পাওয়া মোবাইল নিয়ে বাগবিতণ্ডায় ফারুককে খুন করেন সাদ্দাম 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৩
ছিনতাইয়ে পাওয়া মোবাইল নিয়ে বাগবিতণ্ডায় ফারুককে খুন করেন সাদ্দাম  গ্রেফতার ঘাতক সাদ্দাম ও তার দুই সহযোগী রনি এবং বিজয়

ঢাকা:  মদ ভাগাভাগির সময় ছিনতাইয়ে পাওয়া মোবাইল ফোনগুলো নিয়ে বাগবিতণ্ডায় জেরে বন্ধু ফারুককে খুন করেন মো. সাদ্দাম হোসেন ওরফে সিটু সাব্বির (২৩)। ফারুককে হত্যার ৩ দিন আগে দীর্ঘ ১ বছর পর কারাগার থেকে জামিনে বের হন সাদ্দাম।

 

রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) এইচ এম আজিমুল হক।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টার দিকে তেজগাঁও থানাধীন পানি ভবন সংলগ্ন ফুটপাথে আড্ডা চলাকালীন ফারুকের বাম পায়ের উরুতে ধারালো চাকু দিয়ে আঘাত করেন সাদ্দাম।

গুরুতর আহত অবস্থায় ফারুক হোসেনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে রাতেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় ফারুক।

এ বিষয়ে পরিবারের করা মামলার প্রেক্ষিতে শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) পশ্চিম রাজাবাজার ও তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের মোল্লাবাড়ী বস্তি এলাকা থেকে সাদ্দাম হোসেন সাব্বির ওরফে সিটু সাব্বির (২৩) সহ তার দুই সহযোগীকে গ্রেফতার করে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগ।

গ্রেফতার সাদ্দামের দুই সহযোগী হলেন- মো. রনি (২৬) ও মো. বিজয় (৩৪)। অভিযানে তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ১টি ধারালো চাকু ও ১০টি বিভিন্ন মডেলের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

নিহত ফারুক হোসেন ছিলেন দিনমজুর। তার গ্রামের বাড়ি জামালপুরে। অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে কারওয়ান বাজার বস্তিতে একটি ঘরে ভাড়া থাকতেন ফারুক।

এসব তথ্য জানিয়ে উপ-কমিশনার এইচ এম আজিমুল হক বলেন, মো. সাদ্দাম হোসেন সাব্বির ওরফে সিটু সাব্বির ওরফে সাগর ১ বছর কারাভোগের পর জামিনে বের হন। বের হয়েই তিনি ছিনতাইকর্ম শুরু করেন। বনানী ও মহাখালী থেকে ১২টি বিভিন্ন মডেলের মোবাইল ফোন ছিনতাই করেন তিনি। এরপর তিনি তেজগাঁওয়ের পানি ভবন সংলগ্ন ফুটপাতে তার বন্ধু রনি, বিজয় ও ফারুক হোসেনের সঙ্গে আড্ডায় যোগ দেন। এসব মোবাইল ফোন বিক্রি করে অনেক টাকা পাওয়া যাবে মন্তব্য করে সাদ্দামের কাছে মদ খেতে চান আড্ডায় উপস্থিত থাকা ফারুক, রনি ও বিজয়। সাদ্দাম বার থেকে মদ কিনে আনেন। মদ ভাগাভাগির সময় ছিনতাই বিষয় নিয়ে ফারুকের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা বাধে সাদ্দামের। একপর্যায়ে পূর্ব শত্রুতার আক্রোশে নিজের কাছে থাকা ধারালো চাকু দিয়ে ফারুকের বাম পায়ের উরুতে আঘাত করে সাদ্দাম। রক্তাক্ত ফারুককে ফেলে সাদ্দাম ও তার বন্ধুরা পালিয়ে যায়। ফারুককে হাসপাতালে নিয়ে যায় বিজয়। ভুক্তভোগীর মৃত্যুর পরই হাসপাতাল ত্যাগ করে বিজয়।

ডিসি বলেন, সাদ্দাম হোসেন ওরফে সিটু সাব্বির ওরফে সাগর একজন চিহ্নিত অপরাধী। তেজগাঁও ও হাতিরঝিল থানায় তার বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ও দস্যুতার চেষ্টার অপরাধে ৭টি মামলা রয়েছে। ফারুককে হত্যার ৩ দিন আগে সে দীর্ঘ ১ বছর পর কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি লাভ করেন।  

অপর অভিযুক্ত মো. রনির বিরুদ্ধে তেজগাঁও ও তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় অস্ত্র, মাদক, দস্যুতার চেষ্টা ও ডাকাতির চেষ্টাসহ বিভিন্ন অপরাধে ১৩টি মামলা রয়েছে। অভিযুক্ত হৃদয় ওরফে বিজয় শেখের বিরুদ্ধে তেজগাঁও ও তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় ১৪টি মাদকসহ মোট ১৭টি মামলা আছে। নিহত ফারুক হোসেনের নামেও তেজগাঁও ও তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় ২ টি মাদক মামলা ছিল।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৩
এসজেএ/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।