ঢাকা: বাংলাদেশে পুলিশ বাহিনীতে প্রথমবারের মতো কোনো ডগ স্কোয়াড পরিচালনার দায়িত্ব পেলেন সাত নারী সদস্য। শুধু বাংলাদেশই নয় দক্ষিণ এশিয়ায় কোনো বাহিনীর ডগ স্কোয়াডে নারী হ্যান্ডলার এটিই প্রথম।
ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের মাধ্যমে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের এই ৭ নারী সদস্যকে ডগ স্কোয়াডের হ্যান্ডলার হিসেবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তারা এখন থেকে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের ডগ স্কোয়াডে নিজেদের দায়িত্ব পালন করবেন।
প্রশিক্ষণ নেওয়া সাত নারী কনস্টেবল হলেন—নাসিমা, তানজীমা, সুনেত্রা, মরিয়ম আক্তার, নিলুফা, অনামিকা ও ইশরাত।
এয়াপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন জানায়, যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের সহযোগিতায় এই সাত নারী কনস্টেবলকে ৬ দিনের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে ডগ হ্যান্ডলারের। এখন থেকে তারা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দায়িত্ব পালন করবেন। দায়িত্ব পালনের সময় কেউ বিমানবন্দরে চোরাই মালামাল বা অবৈধ মালামাল নিয়ে এলো কিনা ডগ স্কোয়াডের মাধ্যমে খুঁজে বের করবেন।
বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) দুপুরে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন ব্যারাকে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই সাত নারী কনস্টেবলের হাতে ডগ হ্যান্ডলার হিসেবে প্রশিক্ষণ শেষ করা সার্টিফিকেট তুলে দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে এয়াপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক ও অতিরিক্ত ডিআইজি তোফায়েল আহম্মদ বলেন, বর্তমানে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন ছাড়াও ডিএমপি ও র্যাবের ডগ স্কোয়াড রয়েছে। তবে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন দেশে ইতিহাস সৃষ্টি করে নিজেদের ডগ স্কোয়াডে নারী হ্যান্ডলার গড়ে তুলেছে। সাত নারী পুলিশ সদস্য বেসিক কে-নাইন হ্যান্ডলার কোর্সে অংশ নিয়ে নতুন যুগের সূচনা করেছেন।
তিনি বলেন, আমরা চাই শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি নিরাপত্তা পরিস্থিতি যেন এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটলিয়ন সবার সহযোগিতায় প্রাথমিক ধাক্কাটা সামলাতে পারে। আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা থাকবে, তার পরেও আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব এই ইউনিটটা যেন ভালোভাবে কাজ করতে পারে।
অতিরিক্ত ডিআইজি আরও বলেন, এই কে-নাইনকে আমরা একটা আন্তর্জাতিক মানের কে-নাইন করতে চাচ্ছি। নারী হ্যান্ডলারদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আমরা এই যাত্রা শুরু করেছি। আশা করি নারী হ্যান্ডলারদের দিয়ে আমরা সুন্দরভাবে এই কে-নাইন পরিচালনা করতে পারবে।
তিনি বলেন, নারী হ্যান্ডলার বাংলাদেশে আর নেই। আমি যতটুকু জানি দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে আর কোনো বাহিনীর ডগ স্কোয়াডে নারী হ্যান্ডলার নেই। আমরাই প্রথম নারী হ্যান্ডলারদের দিয়ে কে-নাইন পরিচালনা শুরু করেছি।
তোফায়েল আহম্মদ আরও বলেন, আমরা তাদের আগামীতে আরও উন্নত প্রশিক্ষণ দেব। আমরা চেষ্টা করব যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের মাধ্যমে তাদের বিদেশে পাঠিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার। এই সাতজন মেয়ে স্বেচ্ছায় এসেছে। তারা আমাদের ডগ স্কোয়াডের পুরুষ সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে হ্যান্ডলার প্রশিক্ষণ নিতে ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। তারা নতুন যুগের সূচনা করলো।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মো. কামরুল ইসলাম ও যুক্তরাষ্ট্রের কাউন্টার টেররিজম অ্যাডভাইজার ডোনাল ডেনিসন প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০২৩
পিএম/এমজেএফ