ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার বৈলরের মোড় থেকে ধানীখোলা ইউনিয়নের শেষ সীমানা পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার র্দীঘ সড়কটির বেহাল অবস্থা হয়ে গেছে। খানাখন্দকে ভরা এই সড়কে প্রতিনিয়ত ভারি যানবাহন চলাচলের কারণে বর্তমানে সেটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
গত কয়েকদিন আগের বৃষ্টির পানি সড়কটিতে জমে থাকায় এই বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসি।
তাদের অভিযোগ, সংস্কার কাজে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গড়িমসির কারণে এই অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এতে স্থানীয় বাসিন্দাদের ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
বইলর এলাকার বাসিন্দা হযরত আলী বলেন, এই এলাকাটি মাছ চাষের জন্য দেশজুড়ে বিখ্যাত। এ কারণে প্রতিদিনই এই সড়কে শত শত মাছবাহী যান চলাচল করে। কিন্তু সড়কের বেহাল অবস্থা হওয়ায় স্থানীয় মৎস চাষিরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
সূত্র মতে, ২০১৮ সালের জুন মাসে ২৪ ফুট প্রস্থের এই সড়কটি ১২ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে এই সড়কের সংস্কার কাজ শুরু করে মেসার্স ঢালী কনস্ট্রাকশন লিমিটেড। ২০১৯ সালের আগস্ট মাসের ১৩ তারিখের মধ্যে এই কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু চার বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও সংস্কার কাজ শেষ হয়নি।
এতে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসি সড়কটি সংস্কারের দাবি জানান। স্থানীয় শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসি বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) দুপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এতে প্রায় দেড় ঘণ্টা এই মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকায় ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়।
এ ঘটনার খবর পেয়ে ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইন উদ্দিন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সড়ক সংস্কারের আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা অবরোধ তুলে নেন। তবে আগামী পনের দিনের মধ্যে সেটি বাস্তবায়ন করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষণা দেন তারা।
উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সূত্রে জানা গেছে, সড়কের সংস্কার কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ১৫ মাসের মধ্যে। কিন্তু প্রায় ৫৬ মাস পরও সেই কাজ শেষ হয়নি। এই অবস্থায় নির্ধারিত মেয়াদে কাজ শেষ না হওয়ায় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বিল না দেওয়ার পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
সংস্কার কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ঢালী কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম বলেন, বিল না পাওয়ার কারণে আমাদের কাজের ধীর গতি হয়েছে। এখন পর্যন্ত মাত্র আড়াই কোটি টাকার মতো বিল পেয়েছি। তবুও আমরা ইতোমধ্যে এই পাঁচ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটারের কাজ শেষ করেছি। বাকি কাজ আগামী এপ্রিলের মধ্যে শেষ হবে।
ত্রিশাল উপজেলা উপ-সহকারি প্রকৌশলী মো. আনিছুর রহমান বলেন, বিক্ষোভ চলাকালে আমি রাস্তাটি পরিদর্শন করেছি। বাস্তবেই রাস্তাটি চলাচলের অনুপোযোগী। অফিস খোলা হলেই আমরা গর্তগুলো ভরাট করার ব্যবস্থা নেব যাতে আপাতত যানবাহন চলাচল করতে পারে। সেই সঙ্গে সড়কটির সংস্কার কাজ দ্রুত শেষ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০২৩
এফআর