ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির প্রবেশপথে দাঁড়াতেই শোনা গেলো তিন তরুণের কথোপকথন: ‘এই তুই কি বাসা থেকে এসেসিছ নাকি সরাসরি অফিস থেকে?’ উত্তরে তাদের একজন বললেন, ‘তোর ফোনের কারণে আর বাসায় যাওয়ার সাহস করিনি’।
পরিচয় জানতে চাইলে জানালেন, একাউন্টিং বিভাগের মর্তুজা, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ফাহিম ও ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমসের রোকন।
রোববার (২৭ মার্চ) সরেজমিনে দেখা গেছে, টিএসসির মাঠের সবুজ ঘাসের অংশে কোনো গ্রুপে দুই-তিনজন, কোথাও চার-পাঁচজন, কোনো গ্রুপে ১০-১২ জন একসাথে ইফতারের আয়োজন করে অপেক্ষা করছেন। তবে দীর্ঘদিন পরে বন্ধু-বান্ধবদের পেয়ে নানা গল্প-আড্ডায়ও মেতে উঠছেন তারা। সময় বাড়ার সাথে সাথে বাড়তে থাকে ইফতার করতে আসা শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিষেধাজ্ঞার কারণে ভ্রাম্যমাণ দোকান না থাকায় হল কিংবা রেস্টুরেন্ট থেকে ইফতারি নিয়ে আসছেন তারা। অনেক যুগলকেও দেখা গেল একসাথে ইফতার করতে। তাদের অনেককেই বাসা থেকে তৈরি খাবার নিয়ে আসতে দেখা গেছে। ইফতারের সময় ঘনিয়ে হলে পত্রিকা বিছিয়ে বা ওয়ান টাইম প্লেটে করে ইফতার পরিবশেন করছেন তারা। বিশ্ববিদ্যালযের মল চত্বর ও কার্জন হলেও টিএসসির মতো দলবেঁধে ইফতার করেন শিক্ষার্থীরা।
সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনিস্টিউটের শিক্ষার্থী রুমান মিয়া বলেন, আসলে ভালো লাগা থেকেই টিএসসিতে ইফতার করা। এই ভালো লাগার পেছনে কয়েকটা কারণ আছে। প্রথমত, টিএসসির মাঠটা সুন্দর। এটার আলাদা একটা ঐতিহ্য আছে। দ্বিতীয়ত, অনেকেই এখানে ইফতার করতে আসায় এখানে একটা জমজমাট ভাব আছে। তাই এখানে ইফতার করতে আসি।
স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনিস্টিউটেরের শিক্ষার্থী মাসুম রাহী বলেন, টিএসসিতে সার্বক্ষণিক আনন্দঘন পরিবেশ বিরাজমান। তাই ইফতারের জন্য এই জায়গার আলাদা একটা চাহিদা আছে। এছাড়া, সিনিয়র জুনিয়র সহপাঠীদের সাথে ইফতার করার একটা খোলামেলা জায়গা পাওয়া যায়। অনেক সময় শিক্ষককদের সাথেও দেখা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী নাসিম বাংলানিউজকে বলেন, টিএসসিতে ইফতার করা সব সময়ই আনন্দের। এখানে একসাথে অনেক মানুষ ইফতার করে। আবার আমরা যারা বন্ধু-বান্ধব, ছোট ভাই-বড় ভাই সবাই মিলে ইফতার করা অনেকটা উৎসবের মতো। এই সময়ে আমরা পরিবারের সাথে থাকলে হয়তো, সেখানে নিজেদের মতো করে ইফতার করতাম। এখানে কিন্তু আমরা একটা বড় পরিবারের মতোই ইফতার করছি।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩০ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২৩
এসকেবি/এমজেএফ