ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

পদ্মা সেতুতে উঠতে প্রস্তুত বিশেষ ট্রেন

নিশাত বিজয়, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ৪, ২০২৩
পদ্মা সেতুতে উঠতে প্রস্তুত বিশেষ ট্রেন

ঢাকা: দেশের যোগাযোগ অবকাঠামো খাতে যুক্ত হয়েছে নতুন পালক। বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতুতে উঠতে ভাঙ্গা রেল জংশন থেকে পরীক্ষামূলকভাবে ‘বিশেষ ট্রেন’ যাত্রা শুরু করেছে।

বিগত ২০২২ সালের ২৫ জুন পদ্মা নদীর ওপর সড়ক সেতুর উদ্বোধন হলেও অপেক্ষা ছিলে রেলপথ চালুর। অবশেষে সেই অপেক্ষার অবসান ঘটছে।

মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) শিবচরের দুটি স্টেশন হয়ে পদ্মা রেলসেতু পার হয়ে মাওয়া পর্যন্ত যাবে রেল। তাই ভাঙ্গা স্টেশন থেকে মাওয়া পর্যন্ত রয়েছে সাজ সাজ রব। স্থানীয়দের মধ্যে বিরাজ করছে উচ্ছ্বাস। রয়েছে উৎসবমূখর পরিবেশ।  

পদ্মা সেতুতে চলাচলকারী বিশেষ ট্রেনের চালক হয়ে ইতিহাসের অংশ হয়ে গর্বিত লোকো মাস্টার রবিউল ইসলাম।

তিনি বলেন, আমি যখন জানতে পারলাম যে প্রথম ট্রেন চালাব তখন থেকেই উচ্ছ্বাস কাজ করছে। ইতিহাসের অংশ হতে পেরে নিজেকে গর্বিত লাগছে।

বর্তমানে রেলপথে ঢাকার সঙ্গে খুলনার দূরত্ব ৪৬০ কিলোমিটার। পদ্মা সেতু দিয়ে নতুন রেলপথটি চালু হলে দূরত্ব কমবে ২১২ কিলোমিটার। তখন ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত রেলপথের দূরত্ব হবে ১৬৯ কিলোমিটার।

পাশাপাশি কুষ্টিয়া, দর্শনার সঙ্গেও কমবে দূরত্ব ও ভোগান্তি। অন্যদিকে ফরিদপুর, রাজবাড়ী রুটের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে  নতুন পথে নতুন রেলযাত্রী তৈরি হবে।

এ প্রকল্পের মাধ্যমে মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও নড়াইল জেলা দিয়ে যশোরের সঙ্গে রেল নেটওয়ার্ক যুক্ত হবে।

এ বিষয়ে পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পের পরিচালক আফজাল হোসেন বলেন, পুরো ৪২ কিলোমিটার পথে গ্যাংকার চালানোর পরিকল্পনা আছে।

অগ্রগতির বিষয়ে তিনি বলেন, পুরো প্রকল্পের অগ্রগতি ৭৫ শতাংশের বেশি। আর পুরো প্রকল্পকে তিনটি ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। ঢাকা থেকে মাওয়া অংশের অগ্রগতির ৭৪ ভাগ, মাওয়া থেকে ভাঙ্গা অংশের অগ্রগতি ৯২ ভাগ এবং ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত অগ্রগতি ৬৮ ভাগ।

তবে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮২ কিলোমিটারের অংশে আগামী সেপ্টেম্বর যাত্রীবাহী রেল চলাচলের আশা করছেন প্রকল্প পরিচালক আফজাল হোসেন।

এরই মধ্যে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার এই রেলপথে লেভেল ক্রসিংবিহীন ৩২টি রেল কালভার্ট, ৩৭টি আন্ডারপাস এবং ১৩টি রেল সেতুর কাজ শেষ হয়েছে।

চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তের রেল স্টেশনসহ নতুন ১৪টি স্টেশন নির্মাণ এবং পুরনো ছয়টি স্টেশনের কাজ।

প্রসঙ্গত, দেশের দীর্ঘতম সেতু নির্মাণে প্রথমে যে পরিকল্পনা করা হয়, তাতে রেলওয়ে ট্রাক বসানোর বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত ছিল না। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর রেল চালুর বিষয়টি যুক্ত করা হয়।

সড়ক সেতুর নিচ দিয়ে ট্রেন চলাচলের ব্যবস্থা করায় ঢাকার সঙ্গে যশোর রেললাইন নির্মাণে আলাদা প্রকল্প নেয় বাংলাদেশ রেলওয়ে।

এ প্রকল্পে অর্থায়ন করছে চীন। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। রেল সংযোগের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৩ ঘণ্টা, ৪ এপ্রিল, ২০২২
এনবি/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।