ঢাকা: এনেক্সকো টাওয়ার মার্কেটের ব্যবসায়ীরা আশঙ্কা করছেন রাতের মধ্যে যদি তারা বেঁচে যাওয়া মালামাল সরাতে না পারেন, চুরি হয়ে যেতে পারে। কারণ, গুলিস্তান এলাকায় হেরোইন, গাঁজা, ইয়াবাসেবীদের সংখ্যা বহু; তা ছাড়া রয়েছে ভবঘুরে বখাটেদের আনাগোনা।
মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) সকালে ভয়াবহ আগুনের ঘটনা ঘটে বঙ্গবাজারে। আগুন লাগে বঙ্গ মার্কেট-এনেক্সকো টাওয়ারসহ আশপাশের ছয়টি মার্কেটে। আগুনের ঘটনার পর ব্যবসায়ীর নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে যেসব মালামাল সরিয়ে নিতে পেরেছিলেন, এনে রেখেছেন রাস্তা। এখনই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে না পারলে এসব চুরির সম্ভাবনা রয়েছে।
ইতোমধ্যে অনেক ব্যবসায়ীর মালামাল হারিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাই কষ্ট হলেও প্রচুর অর্থ খরচ করা পণ্যগুলো সরিয়ে নিতে চাইছেন তারা। এর মধ্যে দেখা দিয়েছে লেবার সঙ্কট। পর্যাপ্ত লোকবলের অভাবে মালামাল সরাতেও বেগ পেতে হচ্ছে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদের। এ অবস্থায় তারা আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা কামনা করেন। মানবিক স্বার্থে আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের মালামাল সরাতে সুযোগ করে দিচ্ছেন।
বঙ্গ মার্কেট তো পুড়ে ছাই হয়ে গেছে, অধিকাংশ পুড়েছে অন্যগুলোরও। বঙ্গ মার্কেটের বিপরীতে থাকা এনেক্সকো টাওয়ার মার্কেটের চার ও পাঁচতলা পুড়েছে। বাকিতলাগুলোর তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। অক্ষত রয়েছে সেখানকার মালামাল। সেগুলোই সরিয়ে নিতে চাইছেন ব্যবসায়ীরা।
সন্ধ্যায় সরজমিনে দেখা গেছে, বঙ্গবাজার এলাকা ও এনেক্সকো টাওয়ার মার্কেটের সামনে বেঁচে যাওয়া মালামাল এনে কর্মচারী হাসপাতালের সামনের রাস্তায় জড়ো করছেন ব্যবসায়ীরা। লেবার সংকট থাকায় অনেক ব্যবসায়ী নিজেই মাথায় করে সেগুলো রাস্তায় এনে রাখছিলেন। পরে সেখান থেকে পিকআপে করে যার যার গন্তব্যে নিয়ে যাচ্ছেন।
এর আগে রাস্তায় পড়ে থাকা বিভিন্ন দোকানের পরিত্যক্ত ক্যাশবাক্স ও কাপড়ের বস্তা নিয়ে দৌড়ে পালাতে দেখা যায় কিছু ভবঘুরেকে। এ কাণ্ড আইন আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর নজরে আসলে তাদের বাধা দেওয়া হয়। এরপর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্কতা ও নিরাপত্তা বাড়াতে আহ্বান জানান ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা।
এনেক্সকো টাওয়ার মার্কেটের তিন তলায় হৃদয় এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার মোহাম্মদ হৃদয় বাংলানিউজকে বলেন, দিনের বেলা অনেক মালামাল চুরি হয়েছে। এখন রাতের মধ্যে যদি সব সরিয়ে ফেলা না যায়, চুরি হয়ে যাবে। এলাকাটা ভালো না। আশপাশে হিরোইন-গাঁজা-ইয়াবাখোর ভরা। তা ছাড়া ছিনতাইকারীও অনেক।
সরদার ট্রেডার্সের বিক্রয়কর্মী মো. সোহাগ বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের দুই দোকান থেকে ৭০ বস্তা মালামাল বের করতে পেরেছি। আরও ১৫০ বস্তা রয়ে গেছে। লেবার না থাকায় আমরাই মালামাল মাথায় করে বের করে নিয়ে এসেছি। এতে অর্থ খরচ করতে হচ্ছে। আবার চুরির ভয়ও আছে। পিকআপ ভাড়া করতে পারছি না। রাস্তার পাশে মাল রাখায় শঙ্কা বাড়ছে।
ওই এলাকায় পুলিশ-র্যাব সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানান গেছে, সকাল থেকে চুরি-ছিনতাইয়ের কয়েকটি অভিযোগ তারা পেয়েছেন। আর যাতে এমন অমানবিক কাণ্ড না ঘটে, মালামাল চুরি না হয়, সে ব্যবস্থা নেওয়া আছে। আইন রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থানে আছে। ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা রক্ষা করা হবে বলেও তারা জানান।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ৪, ২০২৩
ইএসএস/এমজে