লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান নুরুল আমিনের (৫০) নামে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি অঞ্চল চন্দ্রগঞ্জের আদালতে মামলাটি করেছেন মো. সেলিম (৩০) নামে এক ব্যক্তি।
মামলায় চেয়ারম্যান নুরুল আমিনকে প্রধান আসামি করে আরও ১৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এতে চার-পাঁচজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
অন্য অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন শিপন খলিফা, এম সজিব, রিয়াজ হোসেন, কাজী আল-আমিন, মোরশেদ আলম, আনোয়ার হোসেন বাবু, সাইফুল পাটওয়ারী, আমিরুল ইসলাম মিরন, ইসমাইল হোসেন, তাজু ভূঁইয়া, রাকিব হোসেন, আরাফাত হোসেন রিফাত, মো. জয়, মো. রিমন, মো. পিয়াস, মো. সৈকত ও মো. শাওন।
আদালতের বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখাকে (ডিবি) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বাদীর আইনজীবী ফয়সাল।
বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) আদালতে দায়ের করা মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীর আইনজীবী ইফতেখার ফয়সাল।
তিনি বলেন, বিচারক আনোয়ার হোসেন মামলাটি আমলে নিয়েছেন। ঘটনাটি তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
এদিকে চাঁদা দাবি ও মারধরের ঘটনাকে সাজানো ও মিথ্যা বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিন।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি অভিযুক্তরা চন্দ্রগঞ্জ বাজারে সেলিমের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এ ঘটনায় বিচারের জন্য গেলে সেলিমকে ধমক দিয়ে অভিযুক্তদের দাবি করা টাকা দিতে বলেন চেয়ারম্যান নুরুল আমিন। পরে ঘটনাটি স্থানীয় গণ্যমান্যদের জানালে অভিযুক্তরা সেলিমের ওপর আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।
বুধবার (৫ এপ্রিল) দুপুরে চন্দ্রগঞ্জ বাজারের যাত্রীছাউনি এলাকায় নুরুল আমিনসহ অভিযুক্তরা সেলিমের পথরোধ করে দুই লাখ টাকা দাবি করেন। কিন্তু টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় সেলিমকে পিটিয়ে আহত করা হয়। একপর্যায়ে গলাটিপে তাকে হত্যার চেষ্টা করেন তারা। এসময় তার পকেটে থাকা পাঁচ হাজার টাকা ও প্রায় ২৩ হাজার টাকা মূল্যের একটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেন তারা। পরে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করেন। ১০ দিনের মধ্যে চাঁদার টাকা না দিলে ও ঘটনাটি নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে তারা সেলিমকে হত্যার পর লাশ গুমের হুমকি দেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বাংলানিউজকে বলেন, চন্দ্রগঞ্জ বাজারে সেলিমের কোনো ব্যবসা নেই। সে অটোরিকশা থেকে চাঁদা তোলে। সেলিম আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে মামলা করেছে। এজাহারে ঘটনার যে সময় দেওয়া হয়েছে, তখন আমি পরিষদে ছিলাম। আমার কাছে সাক্ষ্য প্রমাণ আছে। এছাড়া উল্লিখিত স্থানে ওই সময়ে কোনো ঘটনা ঘটেছে বলে কোনো প্রত্যক্ষদর্শী জানাতে পারেনি। একটি চক্র সেলিমকে দিয়ে রাজনৈতিক হয়রানির উদ্দেশে আমার নামে সাজানো মামলা করিয়েছে।
লক্ষ্মীপুর জেলা ডিবি পুলিশের ওসি সাহাদাত হোসেন টিটো বলেন, আমি ঢাকায় ছিলাম। আদালতের নির্দেশনার কপি অফিসে এসেছে কি না জানা নেই। নির্দেশনার কপি হাতে পেলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮০৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৭, ২০২৩
এসআই