ঢাকা, শনিবার, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রোয়াংছড়িতে দুগ্রুপে সংঘর্ষ: আতঙ্কে গ্রাম ছেড়েছে ৭০ পরিবার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৮, ২০২৩
রোয়াংছড়িতে দুগ্রুপে সংঘর্ষ: আতঙ্কে গ্রাম ছেড়েছে ৭০ পরিবার

বান্দরবান: বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আটজন নিহত হওয়ার ঘটনায় আতঙ্কে গ্রাম ছেড়েছে ৭০টি পরিবার।

রোয়াংছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে ৫০টি পরিবার, আর খামতাং পাড়ার পার্শ্ববর্তী রুমা উপজেলার অংশে ২০টি পরিবার রুমা উপজেলা সদরের বম কমিউনিটি হল রুমে আশ্রয় নিয়েছে।

সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) রাতে পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সঙ্গে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ-সংস্কার) সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পরে শুক্রবার সকালে সেখানে জলপাই রঙের পোশাক পরিহিত আটজনের মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন স্থানীয়রা। পরে রোয়াংছড়ি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহগুলো উদ্ধার করে বান্দরবান সদর হাসপাতাল মর্গে নিয়ে যায়।
এদিকে গুলিতে আটজন নিহত হওয়ার ঘটনায় শুক্রবার সকাল থেকে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। গ্রাম ছেড়েছে অনেক পরিবার।

রোয়াংছড়ি উপজেলার খামতাং পাড়ার বাসিন্দা শৈহ্লা খিয়াং জানান, গোলাগুলির পর ভয়ে থাকতে না পেরে আশ্রয় নিতে রোয়াংছড়ি সদরে পালিয়ে এসেছি, সামনে কি হবে জানিনা, তবে পরিস্থিতি ভালো নয়।

এদিকে গত শুক্রবার থেকে রোয়াংছড়ি ও রুমায় আশ্রয় নেওয়া মানুষের মধ্যে আতঙ্কের ছাপ, তারা এক কাপড়ে শিশুদের নিয়ে বাড়ি ছেড়েছেন, পরিস্থিতি শান্ত হলে নিজ বাড়িতে ফিরে যাওয়ার অপেক্ষায় আছেন তারা। আশ্রয় নেওয়ার পর থেকে তাদের খাদ্য সরবরাহ করছে সেনাবাহিনী ও প্রশাসন।

রোয়াংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. খোরশেদ আলম চৌধুরী জানান, ঘটনাস্থলের ওই পাড়া থেকে ৫০টি পরিবার আতঙ্কে রোয়াংছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে এবং ২০টি পরিবার রুমা উপজেলায় আশ্রয়ের খোঁজে চলে গেছে, তাদের উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাবার দেওয়া হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তাদের গ্রামে ফেরত পাঠানো হবে জানান তিনি।  

তিনি আরও বলেন, রোয়াংছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে বর্তমানে ৫০টি পরিবারের ১৯৫ জন এবং রুমা উপজেলার বম কমিউনিটি হল রুমে ২০টি পরিবারের ৬৬ জন অবস্থান করছে আর তাদের সার্বিক সহযোগিতা ও নিরাপত্তায় প্রশাসন সজাগ রয়েছে।

এদিকে শনিবার (০৮ এপ্রিল) দুপুরে ময়নাতদন্তের পর বান্দরবান সদর হাসপাতাল মর্গ থেকে নিহতদের পরিবারের পক্ষে বম সোশ্যাল কাউন্সিলের নেতারা নিহত আটজনের লাশ গ্রহণ করে নিয়ে যায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রোয়াংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল মান্নান।

বান্দরবানের পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম জানান, আটজনকে হত্যার ঘটনার পর জেলাজুড়ে গোয়েন্দা নজরদারির পাশাপাশি জেলায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।  

তিনি আরও জানান, এই ঘটনার পর পুলিশ তাদের নজরদারি বৃদ্ধি করেছে এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করতে কাজ শুরু করেছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৮, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।