ঢাকা, বুধবার, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বগুড়ায় দুদক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার অভিযোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০২৩
বগুড়ায় দুদক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার অভিযোগ বগুড়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসআই আলমগীরের বোন রুমাইয়া শিরিন

বগুড়া: বগুড়ায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আলমগীর হোসেনের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়ার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন হয়েছে।

রোববার (০৯ এপ্রিল) দুপুরে বগুড়া প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন এসআই আলমগীরের বোন রুমাইয়া শিরিন।

অভিযোগ ওঠা দুদকের ওই কর্মকর্তার নাম সুদীপ কুমার চৌধুরী। তিনি বর্তমানে কুড়িগ্রাম জেলায় উপ-সহকারী পরিচালক হিসেবে কর্মরত।

এর আগে ২০২১ সালের ২৪ জানুয়ারি অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বগুড়া দুদক কার্যালয়ে তিনি মামলাটি করেন। মামলার পরদিন উপ-পরিদর্শক (এসআই) আলমগীরকে সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশ।

সংবাদ সম্মেলনে রুমাইয়া শিরিন বলেন, আমার ভাই আলমগীর পুলিশ বাহিনীতে ১৯৯৭ সালে যোগ দেন। কাজের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি আইজিপি ও পিপিএম পদক পান। ২০১৯ সালের ৭ মে বগুড়া দুদক কার্যালয়ের তৎকালীন অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা রবীন্দ্র নাথ চাকী নোটিশের মাধ্যমে জানান, আলমগীর বগুড়ায় ডিবিতে কর্মরত থাকাকালে ২০১৫ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার সম্পদ অর্জন করেছে। তাই তার বক্তব্য দরকার। নোটিশ অনুযায়ী আলমগীর বগুড়ায় দুদক কার্যালয়ে হাজির হয়ে স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তিসহ যাবতীয় আয়ের কাগজপত্র দাখিল করেন।

তিনি বলেন, রবীন্দ্র নাথ চাকী অনুসন্ধানে আমার ভাইয়ের ৬৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ এবং ৩ লাখ ৭৬ হাজার ৭৮ টাকার অস্থাবর সম্পদের বাইরে কিছু না থাকলেও স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী দ্বারা প্রভাবিত হয়ে মিথ্যা প্রতিবেদন দাখিল করে সম্পদ বিবরণী জারি করেন।

রুমাইয়া শিরিন আরও বলেন, আমার ভাই ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি সর্বমোট ৭২ লাখ ৫১ হাজার ৭৮ টাকা স্থাবর অস্থাবর সম্পদ অর্জনের ঘোষণা দিয়ে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। সেটি যাচাইয়ের জন্য একই বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি তদন্তের দায়িত্ব পান তৎকালীন দুদকের বগুড়া কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক সুদীপ কুমার চৌধুরী। ২০২০ দালের ২৮ অক্টোবর যাচাইকালে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের বাইরে কোনো কিছু না পেয়েও এক উকিলের মাধ্যমে আমার কাছে সাত লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। টাকা না দিলে মিথ্যা মামলায় জড়ানোসহ ক্ষতি করবে বলে ভয়ভীতি দেখান। পরে বিষয়টি আমি গোপন রেখে ভয়ে উকিলের মাধ্যমে ৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা দিই। বাকি টাকা দাবি করলে সেটি না দেওয়ায় সুদীপ কুমার চৌধুরী আমার ভাইয়ের নামে মামলা করেন।

রুমাইয়া শিরিন বলেন, ২০২১ এবং ২০২২ সালের বিভিন্ন সময়ে সুদীপ কুমার অবৈধভাবে টাকা দাবি করছে এমন কল রেকর্ডসহ দুদকের বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করলেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি। আমার ভাই পরিবার নিয়ে বর্তমানে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।

আলমগীর হোসেন বলেন, মিথ্যা মামলা দিয়ে সুদীপ কুমার চৌধুরী আমার জীবনটা এলোমেলো করে দিয়েছেন। এখন পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছি। মাঝে মাঝে মনে হয়, এই জীবন না রাখাই ভালো।

এ বিষয়ে দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক সুদীপ কুমার চৌধুরী মুঠোফোনে বলেন, ‘এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। তারা যা পারে করুক। যেহেতু মামলা চলছে তাই পরেই সব জানা যাবে। ’

বাংলাদেশ সময়: ২০১৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০২৩
কেইউএ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।