ঢাকা: ‘আসামি কবিরের স্ত্রীর দিকে কু-নজর দেওয়ায় পরিকল্পিতভাবে গলা কেটে হত্যা করা হয় নবী হোসেন ওরফে নূর নবীকে। এ হত্যার ঘটনায় জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।
সোমবার (১০ এপ্রিল) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার এইচ এম আজিমুল হক।
তিনি বলেন, নিহত নূর নবী মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধে চলাচল করা লেগুনার লাইনম্যান ছিলেন। একই এলাকার কবিরের সঙ্গে দীর্ঘদিনের পরিচয়। তবে তাদের সঙ্গে লেগুনার চাঁদা ও নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধের সৃষ্টি হয়। এরইমধ্যে কবিরের স্ত্রীকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য ও কু-নজর দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন তিনি। পরে কবিরের পরিকল্পনায় চূড়ান্ত হয় নূর নবীকে হত্যার সিদ্ধান্ত। গত ৪ মার্চ রাত ১০টার দিকে মোহাম্মদপুর থানার বসিলা হাউজিংয়ের ৪০ ফিট রোডের শেষ মাথায় তুরাগ নদের পাড়ে আসামিরা নূর নবীকে নিয়ে যান। সেখানে আগে থেকে ১০টি ঘুমের ওষুধ মদের সঙ্গে মিশিয়ে নিয়ে আসেন তারা। তুরাগের পাড়ে ওয়াকওয়েতে বসে নূর নবীকে মদ পান করানো হয়। এর কিছুক্ষণ পর নূর নবী অচেতন হয়ে পড়েন। এ সময় ঘাতকরা ওয়াকওয়ের নিচে নিয়ে যায় নূর নবীকে। সেখানে নিয়ে প্রধান আসামি কবির নূর নবীর মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করেন। একপর্যায়ে ইমরান সঙ্গে আনা ধারালো ছুরি দিয়ে নূর নবীর গলা কেটে হত্যা করা হয়। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী হত্যার পর মরদেহ গুমের উদ্দেশ্যে কবির তুরাগে মরদেহটি ভাসিয়ে দেন।
ডিসি আজিমুল হক আরও বলেন, মরদেহ উদ্ধার হওয়ার ঘটনার তিন দিন পর নিহতের বড় ভাই একটি মামলা দায়ের করলে তদন্তে নামে পুলিশ। হত্যায় জড়িতদের শনাক্ত করতে বসিলা ও এর আশপাশের এলাকার দুই শতাধিক সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। ফুটেজ বিশ্লেষণ করে হত্যাকরীদের শনাক্ত করা হয়। আসামিরা ঘটনার পর থেকে রাজধানীরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে আত্মগোপন করেন। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মামলা দায়েরে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে ডিসি বলেন, হত্যার ঘটনায় স্ত্রীর দিকে আপত্তিকর মন্তব্য কু-নজর দেওয়ায় নূর নবীকে হত্যার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। তবে এর বাইরেও কোনো বিষয় আছে কিনা সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০২৩
এমএমআই/এএটি