কক্সবাজার: কক্সবাজারে খুলনার সাবেক কাউন্সিলর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গোলাম রব্বানী টিপু হত্যাকাণ্ড নিয়ে রীতিমতো ধোয়াশায় পড়েছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তাছাড়া নিহত টিপুর সঙ্গে থাকা নারীর পরিচয় নিয়েও গেল পাঁচদিন ধরে জট কাটছিল না।
মঙ্গলাবার (১৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় চাঞ্চল্যকর গোলাম রব্বানী টিপু হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত তিন আসামিকে ঘটনার পাঁচদিন পর গ্রেপ্তার করেছে কক্সবাজার জেলা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে হোটেলে অবস্থানকারী সঙ্গীয় নারীও রয়েছেন।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে কক্সবাজার জেলা পুলিশের এক সংবাদ সম্মেলনে এতথ্য নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার মো. রহমত উল্লাহ।
এ সময় তিনি বলেন, ঘটনার পর থেকে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান অব্যাহত ছিল। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন তথ্যে পুলিশ জানতে পারে ঘটনায় জড়িত নারীসহ কয়েকজন আসামি মৌলভীবাজার জেলায় অবস্থান করছে।
এই তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার থেকে জেলা পুলিশের একটি দল মৌলভীবাজারে অবস্থান করে অভিযান চালায়। একপর্যায়ে গত সোমবার মধ্যরাতে মৌলভীবাজার থেকে সাবেক কাউন্সিলর গোলাম রব্বানী টিপুর সঙ্গে কক্সবাজার ঘুরতে আসা এক নারীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত পিস্তলটিও জব্দ করা হয়।
হত্যাকাণ্ডের পর থেকে লাপাত্তা নারী ও হত্যাকারীরা এসেছিলেন ইম্পেরিয়াল এক্সপ্রেসের একটি বাসে। হোটেল কক্ষে পাওয়া সেই বাসের একটি লাগেজ ট্যাগ পায় তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।
এটির সূত্র ধরেই কাজ শুরু করে তারা। এই বাসের অন্যান্য যাত্রীসহ নাম্বার তল্লাশি করা হয়। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় একপর্যায়ে ঋতুর নাম উঠে আসে। তারপর থেকে ঋতুর অবস্থান শনাক্তের চেষ্টা করা হয়।
একপর্যায়ে মৌলভীবাজার জেলার জিরি থানার কাপনা পাহাড় এলাকা থেকে এই হত্যাকাণ্ডের অন্যতম সহযোগী ঋতুসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় জেলা পুলিশের চৌকস একটি টিম।
যার নেতৃত্ব দিয়েছেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) পেয়ার আহমেদ। গ্রেপ্তারকৃত ঋতু খুলনা সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের দেওয়ানমোল্লা পাড়ার সেলিম আকনের মেয়ে। তালাকপ্রাপ্তা এই নারী এলাকায় কলগার্ল হিসেবে বেশ পরিচিত।
অপর দুইজনের একজন খুলনা সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের দেওয়ানমোল্লা পাড়ার জামাল শেখের ছেলে শেখ শাহরিয়ার ওরফে পাপ্পু (২৭)। তিনি এলাকায় শুটার পাপ্পু হিসেবে পরিচিতি।
তার সহযোগী ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যম কারিগর পাড়ার হায়দার সরদার অদুদের ছেলে গোলাম রসূল (২৫)। গ্রেপ্তার তিনজন হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়।
পুলিশ সুপার রহমত উল্লাহ বলেন, গ্রেপ্তার তিনজনই হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত ছিল। এদের মধ্যে ওই নারী কক্সবাজার ঘুরতে এসে কাউন্সিলর টিপুর সঙ্গে হোটেলে উঠেছিলেন। আর ঘটনার পর থেকে ওই নারীর সন্ধান পাচ্ছিল না পুলিশ।
এছাড়া গ্রেপ্তার অপর দুইজন হত্যাকাণ্ডের মিশনে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছে। গ্রেপ্তারকৃতদের আজ সকালে মৌলভীবাজার থেকে কক্সবাজার নিয়ে আসা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০২৫
আরএ