ঢাকা: একাত্তরের রণাঙ্গনের সৈনিক বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন নব নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
শোকবার্তায় তিনি বলেন, সেদিন অস্ত্র হাতে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মতো সাহসী সূর্য সন্তানরা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধ করে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিলেন।
নতুন রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, ডা. জাফরুল্লাহ দেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে অবিস্মণীয় অবদান রাখার পাশাপাশি ওষুধ শিল্পে ও ওষুধ খাতে জনকল্যাণে অবদান রেখেছেন। আমি তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।
মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) রাতে নিজের প্রতিষ্ঠিত গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী মারা যান (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরেই কিডনি সমস্যায় ভুগছিলেন। তার বয়স ছিল ৮১ বছর।
জাফরুল্লাহর জন্ম ১৯৪১ সালের ২৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম জেলার রাউজানে। বাবা-মায়ের ১০ সন্তানের মধ্যে তিনি সবার বড়। ঢাকার বকশীবাজারের নবকুমার স্কুল থেকে মেট্রিকুলেশন এবং ঢাকা কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট শেষ করেন তিনি।
এরপর তিনি ১৯৬৪ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস এবং ১৯৬৭ সালে বিলেতের রয়্যাল কলেজ অব সার্জনস থেকে এফআরসিএস প্রাইমারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
বিলেতের রয়্যাল কলেজ অব সার্জনসে এফআরসিএস পড়াকালীন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে তিনি চূড়ান্ত পর্ব শেষ না করেই লন্ডন থেকে ভারতে ফিরে আসেন। ফিরে এসে ডা. এম এ মবিনের সঙ্গে মিলে সেখানেই ৪৮০ শয্যাবিশিষ্ট বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা করেন।
তিনি সেই স্বল্প সময়ের মধ্যে অনেক নারীকে প্রাথমিক স্বাস্থ্য জ্ঞান দেন, যা দিয়ে তারা রোগীদের সেবা করতেন। তার এ অভূতপূর্ব সেবা পদ্ধতি পরে বিশ্ববিখ্যাত জার্নাল পেপার ল্যানসেতে প্রকাশিত হয়।
জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি ১৯৭৭ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার পান।
এছাড়া তিনি ফিলিপাইন থেকে রামন ম্যাগসাইসাই (১৯৮৫) ও সুইডেন থেকে বিকল্প নোবেল হিসাবে পরিচিত রাইট লাইভলিহুড (১৯৯২), মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বার্কলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ইন্টারন্যাশনাল হেলথ হিরো’ (২০০২) এবং মানবতার সেবার জন্য কানাডা থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০২৩
এমইউএম/আরআইএস