ঢাকা: আসন্ন ঈদুল ফিতরের পর ঢাকা নিউ সুপার মার্কেটে (দঃ) অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল বণিক সমিতির নির্বাচন। তাই পুরো মার্কেটটি ছেয়ে ছিল নির্বাচনে অংশ নেওয়া নেতাকর্মীদের ব্যানার পেস্টুনে।
শনিবার (১৫ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাজধানীর নিউ সুপার মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর ঘটনাস্থলে ব্রিফিংকালে অধিদপ্তরের পরিচালক (উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণ) লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেজাউল করিম গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, মার্কেটটির ফায়ার সেফটি সিস্টেম অত্যন্ত দুর্বল ছিল। ব্যবসায়ীরা সিটি করপোরেশন থেকে একটি দোকান বরাদ্দ নিয়ে করিডোরে আরও দুই-তিনটি সাব দোকান দিয়েছিলেন। যার কারণে করিডোরগুলো খুবই সংকীর্ণ হয়ে এক দোকান থেকে আরেক দোকানে কাপড়ের মাধ্যমে আগুন ছড়িয়েছে। এছাড়া মার্কেটের ফলস ছাদ, ওপরে প্লাস্টিক আইটেম ও ব্যানার-পোস্টারের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এসব ব্যানার-ফেস্টুনের বিষয়ে আমাদের সতর্ক হওয়া দরকার। এগুলো পরিহার করার সময় এসেছে।
তিনি বলেন, আগুন এখনো পুরোপুরি নির্বাপন করা যায়নি। আমাদের ১২টি ইউনিট এখনো কাজ করছে। তবে এখন আর মার্কেটে বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা নেই।
মার্কেটের ভেতরের পরিস্থিতি সম্পর্কে লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেজাউল করিম বলেন, মার্কেটের ভেতরের সবগুলো দোকানের সাটার আটকানো ছিল। এর ফলে দোকানের ভেতরের জামা-কাপড় বা ফেব্রিক্সগুলো এখন মোল্ডারিং অ্যাফেক্ট হচ্ছে। অর্থাৎ, তুষের আগুনের মতো কাপড়গুলো জ্বলছে। তাই আমরা প্রতিটি দোকানের সাটারগুলো খুলে খুলে পরীক্ষা করছি এবং পানি দিয়ে আগুন নির্বাপন করছি।
তিনি বলেন, যেহেতু আমরা একটি একটি করে দোকান পরীক্ষা করছি, তাই আগুন পুরোপুরি নির্বাপন করতে সময় লাগবে।
আগুনে কতগুলো দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জানতে চাইলে লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেজাউল করিম বলেন, দুই তলা ও তিন তলার বেশিরভাগ দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নির্দিষ্ট সংখ্যাটি সিটি করপোরেশন বলতে পারবে। আমরা ধারণা করছি ২৫০-৩০০ দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, আগুনে ফায়ার সার্ভিসের ২৪ জন সদস্য আহত হয়েছেন। তারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল ও শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। তাদের বেশিরভাগের ধোঁয়ায় শ্বাসনালীতে সমস্যা হয়েছে।
এর আগে ভোর ৫টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর নিউ সুপার মার্কেটে আগুন লাগে। ৫টা ৪৩ মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের টিম পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরে পর্যায়ক্রমে একে একে ফায়ার সার্ভিসের ৩১টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দেয়। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার চেষ্টায় সকাল ৯টা ১০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
এদিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে যোগ দেয় বডার্র গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), বিমান বাহিনী, নৌ-সেনা বাহিনী। আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থা স্বাভাবিকসহ সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করে এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও পুলিশ সদস্যরা।
বাংলাদেশ সময়: ২১২১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০২৩
এসসি/আরআইএস