ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ঈদের দিন হাতিরঝিলে দর্শনার্থীদের ভিড়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০২৩
ঈদের দিন হাতিরঝিলে দর্শনার্থীদের ভিড়

ঢাকা: ইট-কাঠের উঁচু উঁচু দেয়াল আর যান্ত্রিকতায় ভরা রাজধানী ঢাকায় বিনোদনকেন্দ্রের যেমন বড্ড অভাব রয়েছে, তেমনি ব্যস্ততার কারণে প্রাণ-প্রকৃতির কাছে ঘুরতে যাওয়ারও ফুসরত মেলে না রাজধানীবাসীর। তাইতো কোনো উপলক্ষে একটু সময় পেলেই তারা ছুটে আসেন জল-সবুজে ঘেরা হাতিরঝিলে।

 

শনিবার (২২ এপ্রিল) মুসলিম ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতরে হাতিরঝিল মুখোরিত হয়ে উঠে বিনোদনপ্রেমীদের পদচারণায়। শুধু রাজধানীবাসী নয়, ঢাকার আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে জনপ্রিয় এ স্থানটিতে ঘুরতে আসেন অনেকে।

এদিন দুপুরে অনেকটা ফাঁকা ছিল হাতিরঝিল। তবে বিকেল থেকে বাড়তে থাকে মানুষের ভিড়, যা সন্ধ্যায় উপচে পড়া ভিড়ে পরিণত হয়। ঈদ আনন্দ করতে আসা এসব মানুষের কেউ এসেছেন পরিবার নিয়ে, কেউবা প্রিয়জনকে নিয়ে। আবার বন্ধু-বন্ধব নিয়ে ঘুরতে আসা মানুষের সংখ্যাও কম নয়।  

দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হাতিরঝিল ঘুরে দেখা যায়, ঘুরতে আসা এসব মানুষের কেউ মোবাইলে ছবি তুলছেন, কেউ ঘুরে বেড়াচ্ছেন, কেউ আড্ডা দিচ্ছেন, কেউ নৌকায় চড়ছেন। কেউ কেউ ব্যক্তিগত গাড়ি বা মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন পুরো হাতিরঝিল।

তেমনি একজন বেসরকারি চাকরিজীবী শওকত আলী। প্রথমবারের মতো মেয়ে নাফিসা আঞ্জুম ও স্ত্রী জেমি আক্তারকে নিয়ে ঈদ আনন্দ করতে এসেছেন হাতিরঝিলে। স্মৃতি ধরে রাখতে স্ত্রীর সহযোগিতায় মোবাইল ফোনে তুলে রাখছেন ছবি।

তিনি বলেন, আমার মেয়ের এটাই প্রথম ঈদ। তাই মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে হাতিরঝিলে ঘুরতে এসেছি। ইট-কাঠের এ নগরীর পুরোটাই তো বদ্ধ। হাতিরঝিল খোলামেলা হওয়ায় এ জায়গায় আসা।

ঈদ উদযাপন করতে বরিশাল থেকে ঢাকার লালবাগে খালার বাসায় এসেছেন সরকারি বিএম কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মেহরিন ইসলাম মিম। ঢাকায় ঘোরার মতো জায়গা না থাকায় ঈদের দিন বিকেলে খালাতো বোনদের নিয়ে চলে এসেছেন হাতিরঝিলে।

তিনি বলেন, কাজিনরা তো ঢাকায় ঘোরার মতো জায়গা পায় না। সারাদিন ঘরের মধ্যে বন্দি হয়ে থাকে। তাই তাদের একটু মুক্ত বাতাসে ঘোরাতে হাতিরঝিল নিয়ে এসেছি। এখানে ঝিলের পাড়ে সবুজ প্রকৃতির মাঝে ঘুরতে ভালোই লাগছে।

সহকর্মীদের সঙ্গে নারায়ণগঞ্জ থেকে অফিসের গাড়িতে হাতিরঝিল ঘুরতে এসেছেন রিপন কুমার দাস। তিনি বলেন, ঈদের সময় আমাদের ছুটি না থাকলেও প্রতিবছর ঈদের দিন কাজ শেষ করে আমরা এভাবে ঘুরতে বের হই।

নারায়ণগঞ্জে নদী থাকা সত্ত্বেও হাতিরঝিল ঘুরতে আসার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেখানে তো প্রতিদিনই ঘুরতে যাওয়া হয়। তাই ঈদের দিন যেহেতু একটু স্পেশাল, তাই এখানে ঘুরতে আসা।

রিপনের মতোই সাভার থেকে পরিবার নিয়ে ব্যক্তিগত গাড়িতে হাতিরঝিল ঘুরতে এসেছেন শিক্ষার্থী মোবাশ্বিরা জান্নাত। তিনি বলেন, সাভারে নদীর পাড়ে প্রায় সময়ই ঘুরতে যাওয়া হয়। কিন্তু আজ যেহেতু ঈদ তাই বাড়ি থেকে একটু দূরে বাবা-মা, ভাই-বোনদের সঙ্গে ঘুরতে আসা।

মোবাশ্বিরার ভাই এইচ এস সি প্রথম বর্ষে পড়ুয়া আব্দুল আহাত বলেন, সব সময় তো পরিবারের সবাইকে এভাবে একসঙ্গে পাওয়া যায় না। আজ ঈদের দিনে সবাই মিলে ঘুরতে ভালোই লাগছে।

এদিকে হাতিরঝিলে যাতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বা দুর্ঘটনা না ঘটে সেজন্য পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যদের গাড়ি নিয়ে টহল দিতে দেখা গেছে। ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলও একটি স্পিডবোট নিয়ে টহল দিচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০২৩
এসসি/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।