ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

আশুলিয়ায় লিখন হত্যাকাণ্ড, ‘ভাই বেরাদার’ গ্যাংয়ের ২ সদস্য গ্রেপ্তার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০২৩
আশুলিয়ায় লিখন হত্যাকাণ্ড, ‘ভাই বেরাদার’ গ্যাংয়ের ২ সদস্য গ্রেপ্তার

সাভার (ঢাকা): সাভারের আশুলিয়ায় লিখন নামে এক তরুণকে হত্যার দশ মাস পর ভাই বেরাদার গ্যাংয়ের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল।

শনিবার (২৯ এপ্রিল) সকালে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেন র‌্যাব-৪ কোম্পানি অধিনায়ক লে. কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান।

এর আগে, বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) ও শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) আশুলিয়ার নবারটেক এলাকায় পৃথক দুটি অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তাররা হলো- পাবনা জেলার অনিক (২০) ও জোবায়ের (১৯)। তারা আশুলিয়ার পলাশবাড়ি গোচারারটেক ইস্টার্ন হাউজিংয়ে থাকতো। তারা দুজনই ‘ভাই বেরাদার’ গ্যাংয়ের সদস্য।  

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে র‌্যাব জানায়, ২০২২ সালের ৪ জুলাই সন্ধ্যায় কিশোরদের তৈরি আশুলিয়ার ‘কাইচ্চাবাড়ি গ্যাং’ এবং গোচারারটেক ‘ভাই বেরাদার’ গ্যাংয়ের এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পলাশবাড়ি গোচারারটেক ইস্টার্ন হাউজিং মাঠের পাশে দেশিয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে দুই গ্রুপ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। ওই সময় মাঠে ভিকটিম লিখন তার পরিচিত অপর ভিকটিম মেহেদীকে মারতে দেখে এগিয়ে গিয়ে মারামারি থামানোর চেষ্টা করলে, উভয় গ্রুপের সদস্যরা মেহেদীর সঙ্গে ভিকটিম লিখনকেও এলোপাতাড়ি মারধর করতে থাকে। এক পর্যায়ে আসামিদের সঙ্গে থাকা লোহার রডের আঘাতে ভিকটিম লিখন রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে এবং পরবর্তীতে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় লিখনকে উদ্ধার করে নিকটস্থ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এবং অপর ভিকটিম মেহেদীকে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়। পরদিন (৫ জুলাই) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন লিখনের মৃত্যু হয়।

র‌্যাব আরও জানায়, এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর চাচা শরীফুল ইসলাম বাবু বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় রনি, এনায়েতসহ অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর র‍্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল আসামি মো. রনি ওরুফে মামা রনি (১৮), মো. জিলানী (১৮), মো. সোহাগ (১৯) এবং রাকিবকে (১৮) গ্রেপ্তার করে আশুলিয়া থানায় হস্তান্তর করে।  

পুলিশ হেফাজতে গ্রেপ্তার আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে লিখন হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে মাঠ পর্যায়ে র‍্যাব-৪ এর গোয়েন্দা দলের নজরদারি চলমান থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৭ ও ২৮ এপ্রিল একটি আভিযানিক দল আশুলিয়া থানাধীন নবারটেক এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে অনিক ও জোবায়ের নামে লিখন হত্যাকাণ্ডের অন্যতম সক্রিয় অংশগ্রহণকারীকে গ্রেপ্তারে সক্ষম হয়।

র‌্যাব-৪ এর কোম্পানি অধিনায়ক লে. কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার আসামি অনিক এবং জোবায়ের লিখন হত্যাকাণ্ডে তাদের প্রত্যক্ষ সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে। তারা জানায় যে, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে হত্যাকাণ্ডের বেশ কিছুদিন আগে থেকে গোচারারটেক কিশোর গ্যাং ও কাইচ্চাবাড়ি কিশোর গ্যাং, তথা লিখন গ্রুপ ও রনি গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। চলমান এই দ্বন্দ্বের জেরেই পরিকল্পিতভাবে লিখন হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়।  

গ্রেপ্তার এই দুই কিশোর অপরাধীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান র‍্যাব অধিনায়ক।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০২৩
এসএফ/এনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।