ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

সমুদ্র-সম্পদ নিয়ে গবেষণা ও বিনিয়োগের আহ্বান মন্ত্রীর

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৫ ঘণ্টা, মে ৩, ২০২৩
সমুদ্র-সম্পদ নিয়ে গবেষণা ও বিনিয়োগের আহ্বান মন্ত্রীর শ ম রেজাউল করিম

ঢাকা: জার্মানি বাংলাদেশের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র। দুই দেশ মৎস্য খাতে একসঙ্গে কাজ করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

বাংলাদেশের সমুদ্র-সম্পদ নিয়ে গবেষণা ও বিনিয়োগের জন্য জার্মান বিনিয়োগকারীদের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।  

জার্মানির হামবুর্গের অ্যাংলো-জার্মান ক্লাবে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার দুপুরে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ: সাসটেইনেবলিটি অব সিফুড সাপ্লাই চেইন অ্যান্ড কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স’ শীর্ষক ব্যবসায়িক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। বাংলাদেশ দূতাবাস, জার্মানি, সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়া, বাংলাদেশ এবং জার্মান-এশিয়া প্যাসিফিক বিজনেস অ্যাসোসিয়েশন যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে।  

সেমিনারে প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, জার্মানি অনেক প্রাচীন, উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ। এ দেশের প্রযুক্তি, নীতি, গবেষণা অনেক সমৃদ্ধ। মৎস্য খাতে জার্মানি ও বাংলাদেশ একসঙ্গে কাজ করার ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। এ খাতে দুই দেশের বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময়েরও সুযোগ রয়েছে।  

মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ প্রাকৃতিক সম্পদে পরিপূর্ণ একটি দেশ। বিশেষ করে বাংলাদেশে বিপুল পরিমাণ সমুদ্র সম্পদ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সর্বোচ্চ কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ের মাধ্যমে এক লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটার সমুদ্র এলাকায় আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। এখন আমাদের গবেষণার ক্ষেত্র, সম্পদের ক্ষেত্র অনেক বিস্তৃত। সমুদ্র অঞ্চলে আমাদের খুব বেশি অভিজ্ঞতা নেই। এজন্য আমরা সব সময় সমুদ্র সম্পদের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন উন্নত দেশকে সমুদ্র সম্পদ নিয়ে গবেষণা, বিনিয়োগ ও একসঙ্গে কাজ করার জন্য আমন্ত্রণ জানাই।  

জার্মান বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, জার্মানি বাংলাদেশের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র। দুই দেশ মৎস্য খাতে একসঙ্গে কাজ করতে পারে। মৎস্য খাতে জার্মান বিনিয়োগকারীদের গবেষণা, অভিজ্ঞতা, মৎস্য মাননিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন বাংলাদেশের কাজে লাগবে। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশে এখন বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ ও সরকারের বিনিয়োগ উপযোগী নীতি রয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগের মাধ্যমে শিল্প স্থাপন ও আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে কর অব্যাহতি সুবিধাসহ সরকার সবধরনের সহযোগিতা দেবে।

শ ম রেজাউল করিম বলেন, মৎস্য ও মৎস্য পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিকমানের ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হয়েছে। রপ্তানির আগে প্রতিটি মাছ এখন ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করা হয়। বাংলাদেশের মাছের মান নিয়ে এখন আর বিদেশিদের অভিযোগ নেই। কারণ নিরাপদ মৎস্য ও মৎস্যপণ্য উৎপাদন ও রপ্তানির ক্ষেত্রে এখন বাংলাদেশ কোন আপোষ করে না। মাছের মান নিশ্চিত করতে আগে কোনো আইন ছিল না, বর্তমান সরকার মৎস্য ও মৎস্যপণ্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণে আইন করেছে। আইন অমান্য করলে জরিমানা ও শাস্তির বিধান করা হয়েছে। এ ব্যাপারে সরকার অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে রয়েছে। এমনকি মাছের খাদ্যোর ব্যাপারেও বর্তমান সরকার অনেক সচেতন। বাংলাদেশের মাছ আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা সরকারের লক্ষ্য।

এছাড়া বাংলাদেশে শিগগিরই আন্তর্জাতিক সিফুড মেলা আয়োজন করা হচ্ছে জানিয়ে এ খাত সংশ্লিষ্ট জার্মান গবেষক, আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের সিফুড মেলায় অংশগ্রহণের বাংলাদেশ ভ্রমণের আমন্ত্রণ জানান মন্ত্রী।

জার্মানিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে এবং বাংলাদেশ দূতাবাস, জার্মানির মিনিস্টার (কমার্শিয়াল) মো. সাইফুল ইসলামের সঞ্চালনায় সেমিনারে বাংলাদেশের মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক, হামবুর্গে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল ওয়াল্টার স্কট, বাংলাদেশের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ব্লু ইকোনমি সেলের প্রধান (যুগ্মসচিব) ড. আবু নঈম মুহাম্মদ আবদুছ ছবুর, জার্মান ফিশ প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রির ফেডারেল অ্যাসোসিয়েশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. ম্যাথিয়াস কেলার, গ্লোবাল গ্যাপ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিশ্চিয়ান মোলার, জার্মান-এশিয়া প্যাসিফিক বিজনেস অ্যাসোসিয়েশনের কান্ট্রি কমিটির চেয়ারম্যান থমাস কনিং, জার্মান-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের সিনিয়র সহসভাপতি আব্বাস আলী চৌধুরী,সলিডারিডাড, বাংলাদেশ-এর স্ট্র্যাটেজিক এনগেজমেন্ট লিড মঈন উদ্দিন আহমেদসহ জার্মানির মৎস্য খাতের আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন।  

সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়া, বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সেলিম রেজা হাসান।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩০ ঘণ্টা, মে ০৩, ২০২৩
জিসিজি/এসআইএস 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।