ফরিদপুর: ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ইমরান তালুকদার (৩৫) নামের এক যুবককে খাবারের সময় জোর করে ধরে নিয়ে পায়ের রগ কর্তনের ঘটনায় ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এসময় তাদের কাছে থেকে বেশ কিছু দেশীয় অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে।
শনিবার (০৬ মে) বিকাল ৩টার দিকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে তাদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) মো. হেলালউদ্দিন ভূইয়া।
গ্রেপ্তাররা হচ্ছেন- লাবু মাতুব্বর (৩৫), ফারুক হাওলাদার (৩৫), আকতার মাতুব্বর (৩০), ইকবাল শিকদার (৩০), অহিদ মাতব্বর (৪৩),এদের সকলের বাড়ি ভাঙ্গা উপজেলার ঈশ্বরদী গ্রামে; এছাড় মো. হোসেন খানের (৩৫) বাড়ি ঢাকার লালবাগ এলাকায় ও ফরহাদ হোসেনের (৩৮) বাড়ি মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার বাচামারা গ্রামে।
এর আগে শুক্রবার (০৫ মে) দিনগত রাতে ফরিদপুরের ভাঙ্গাসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো হয়, সাবেক ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মোখলেছুর রহমান সুমন তার পেট্রোল পাম্প (হাজী ইরফান উদ্দিন ফিলিং স্টেশন) এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে শুক্রবার সকালে ইমরান তালুকদার (৩৫) ও শাওন বেপারীকে (২২) সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মোখলেছুর রহমান সুমনের অনুসারী লাবুসহ ছয় থেকে সাত জন লোক পুলিয়া বাজার থেকে নাস্তা খাবার অবস্থায় দোকান থেকে জোর করে তুলে নিয়ে যায়।
সুমনের পেট্রোল পাম্পের পিছনে একটি মেহগনি বাগানে নিয়ে তাদের মারধর করে এবং একপর্যায়ে ইমরানের বাঁ পায়ের রগ জোর করে কেটে দেয়।
সংবাদ পেয়ে ভাংগা থানা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) মো. হেলাল উদ্দিন ভূইয়া ও অফিসার ইনচার্জ মো. জিয়ারুল ইসলাম সঙ্গীয় অফিসার ও তাদের ফোর্স নিয়ে ফারুক ও ইয়াসিন হাওলাদারের বসতবাড়ির খাটের নিচ থেকে আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করেন এবং চিকিৎসার জন্য ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে তাদেরকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়।
এমন বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় ইমরানের ভাই ইকবাল বাদী হয়ে শনিবার ভাঙ্গা থানায় ২৯ জনকে নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ১০/১২ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। এর আগে শুক্রবার দিনগত রাতে ভাঙ্গা থানা পুলিশ ভাঙ্গারসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সাত জন আসামিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন।
অন্যদিকে, মামলার মূল আসামি মোখলেছুর রহমান সুমন ঢাকার দিকে প্রাইভেট কার যোগে পালানোর সময় পদ্মা সেতুর টোল প্লাজা এলাকা থেকে তাকে আটকের চেষ্টা কালে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তার ব্যবহৃত প্রাইভেটকার (ঢাকা মেট্রো গ- ২৫-৮৫০১), ব্যক্তিগত মোবাইল ও ব্যক্তিগত একটি ব্যাগ ফেলে পালিয়ে যায়। এ সময় সুমনের পেট্রোল পাম্প থেকে দুটি রামদা, ৫৫টি কালি, একটি ধনুক, ফেলে যাওয়া গাড়ি, ব্যাগ জব্দ করে পুলিশ। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ তৎপর রয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়ারুল ইসলামসহ পুলিশ ও প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৮ ঘণ্টা, মে ০৬, ২০২৩
এসএম