সাভার (ঢাকা): সাভার পৌর ছাত্রলীগের সভাপতির বিরুদ্ধে ১০ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আহত পাঁচ জন সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
রোববার (০৭ এপ্রিল) দুপুরে আহত ব্যবসায়ী ইউনুস আলী চুন্নু সাভার মডেল থানায় ৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এর আগে, শনিবার (০৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সাভার পৌর এলাকার আনন্দপুর মহল্লার আনন্দপুর টিম্বার অ্যান্ড স’মিল, নিউ আনন্দপুর টিম্বার অ্যান্ড স’মিল, আনন্দপুর ফল মার্কেট ও পার্শ্ববর্তী বিসমিল্লাহ ওয়াশ কারখানায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্তরা হলেন- সাভারের নামাগেন্ডা এলাকার হোসেন আলীর ছেলে ও সাভার পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি মাসুম দেওয়ান ওরফে মুরগি মাসুম (২৫), একই এলাকার ইমান আলির ছেলে আলমগীর (৩০), সোহেল রানা (৩৩), নামাগেন্ডা এলাকার হাবু মিয়ার ছেলে নাদিম দেওয়ান (২৪), উলাইল এলাকার আব্দুল জলিলের ছেলে টিপু (২৮), কাতলাপুর এলাকার বাবু (২৮), পলাশ (৩০), মজিদপুর এলাকার পাভেল (৩৫), নামাগেন্ডা এলাকার হানিফের ছেলে সজীবসহ (২৪) অজ্ঞাতনামা আরও ১০/১২ জন।
আহতরা হলেন- বিসমিল্লাহ ওয়াশ কারখানার স্বত্বাধিকারী আনন্দপুর এলাকার মৃত আইয়ুব আলীর ছেলে ইউসুফ আলী চুন্নু (৪৫), তার ছেলে আবির হোসেন (২১), ছোট ভাই মো. নান্নু (৪০), স্ত্রী রত্না ও ভাতিজা বাহাদুর (২৭)।
আহত ব্যবসায়ী ইউসুফ আলী চুন্নু বলেন, সাভার পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি মাসুম দেওয়ান গত ১ মাস ধরে তার কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছে। চাঁদা না দেওয়ায় শনিবার সন্ধ্যায় ২০-২৫ জনের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী নিয়ে আমার কারখানায় হামলা চালায়।
তিনি আরও বলেন, মাসুম দেওয়ান আমাকে অস্ত্র ঠেঁকিয়ে প্রতিষ্ঠানের ক্যাশ এবং সঙ্গে থাকা ৪ লাখ ৩৫ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়। তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের প্রতিবাদ করায় আমার ছেলে, স্ত্রী, ভাতিজা ও ছোটভাইসহ ৫ জনকে পিটিয়ে জখম করে। মাসুম দেওয়ান তার হাতে থাকা পিস্তল দিয়ে আমার ছেলের মাথায় আঘাত করেন। একপর্যায়ে চাঁদার বাকি টাকা দ্রুত পৌছে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে দলবল নিয়ে চলে যায়।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী নান্নু নিজেকে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে বলেন, আমিও একসময় ওয়ার্ড ছাত্রলীগের পদে ছিলাম। ব্যবসায় জড়িত হবার পর রাজনীতি ছেড়ে দিয়েছি। তবে এখনো আমি আওয়ামী লীগকেই ভোট দেই। কিছু নামধারী কুলাঙ্গার ছাত্রলীগ নেতা আমার ভাই ভাতিজাসহ আমাকে চাঁদার দাবিতে মারধর করেছে। আমরা আমাদের নিজস্ব জায়গায় ব্যবসা করলেও বিগত কয়েকদিন ধরে পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি মাসুম বাহিনী আমাদেরকে চাঁদার জন্য বিভিন্ন হুমকি দিয়ে আসছিল। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
তবে এ ব্যাপারে অভিযুক্ত পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি মাসুম দেওয়ান ও সাভার সদর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতির মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তারা কেউই ফোনকল রিসিভ করেননি।
ঢাকা জেলা উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি সাইদুর রহমান বলেন, বিষয়টি জানা নেই। তবে এ ধরনের ঘটনার প্রমাণ পাওয়া গেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাভার মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) নয়ন কারকুন বলেন, চাঁদার দাবিতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনায় লিখিত একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করে এ বিষয়ে আইনগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, মে ০৭, ২০২৩
এসএফ/এসএ