ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বখাটের হাতে নিহত মুক্তির বড় বোনকে চাকরি দিলেন ডিসি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৩ ঘণ্টা, মে ৯, ২০২৩
বখাটের হাতে নিহত মুক্তির বড় বোনকে চাকরি দিলেন ডিসি

নেত্রকোনা: নেত্রকোনার বারহাট্টায় প্রেমনগর ছালিপুরা উচ্চ বিদ্যালয়েরে ১০ম শ্রেণির ছাত্রী মুক্তি রানী বর্মণকে হত্যা করা হয়। বখাটের দায়ের কোপে নিহত হওয়ার এ ঘটনায় স্কুলের সহপাঠী, শিক্ষক স্বজনসহ স্থানীয়রা সবাই মর্মাহত।

স্বজন হারানোর শোক কাটিয়ে উঠতে ঘটনার পর থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা পরিবারটির খোঁজ রেখেছেন। সমবেদনা জানাতে অনেকে ছুটে গিয়েছেন গ্রামের বাড়ি বারহাট্টা উপজেলার প্রেমনগরে। সেইসঙ্গে নিরাপত্তাসহ সার্বিক খোঁজ রাখছেন জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

পরিবারটির পাশে দাঁড়িয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য সমাজ কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ আলী খান খসরু। দিয়েছেন আর্থিক সহায়তা। এর ধারাবাহিকতায় নিহত মুক্তির বড় বোন নিপা রানী বর্মনকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে আউটসোর্সিং দপ্তরে চাকরির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ।

মঙ্গলবার (০৯ মে) দুপুরে মুক্তির মা-বাবাসহ সপরিবারে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে যান। এ সময় তাদের সঙ্গে নানা আলোচনা ও অভাব অভিযোগ শুনে তাৎক্ষণিক চাকরির ব্যবস্থা করে দেন জেলা প্রশাসক। এ সময় মেয়ে হারানোর শোক কাটিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। আজকে থেকেই নিপা রানীর যোগদানের ব্যবস্থা করা হয়। অল্প সময়ে চাকরির ব্যবস্থায় কিছুটা হলেও আনন্দিত হয়েছে পরিবারটি।

এ সময় সেখানে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আশিক নূর, জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মামুন খন্দকার, নেত্রকোনা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও জেলা পূজা উদযাপন কমিটির নেতাকর্মীরা। তাৎক্ষণিক পরিবারটির পাশে দাঁড়িয়ে মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বলে মন্তব্য করেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট সিতাংশু বিকাশ আচার্য্য, পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক লিটন পণ্ডিতসহ আরও অনেকেই।

মূলত পরিবারটির সচ্ছলতা ও অন্যান্য শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা চালিয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার লক্ষ্যে কর্মসংস্থান জরুরি হওয়ায় মুক্তির বাবার সঙ্গে কথা বলে নিপার চাকরির ব্যবস্থা করা হয়। এ সময় পরিবারের সবাইকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামির সর্বোচ্চ সাজা দেওয়ার নিশ্চয়তাও দেওয়া হয়। পরিবারটির সার্বিক নিরাপত্তা ও প্রত্যন্ত গ্রামটির যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নেও উদ্যোগ নেওয়া হবে। পাশাপাশি সামাজিক অবক্ষয় ও ইভটিজিং প্রতিরোধেও জেলাব্যাপী কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ।

উল্লেখ্য, এ ঘটনায় জড়িত একই গ্রামের শামছু মিয়ার ছেলে কাউসারকে (১৮) ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই গ্রেপ্তার করে জেলা পুলিশ। মূলত প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় ক্ষিপ্ত হয়ে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে বলে পুলিশ ও আদালতের কাছে স্বীকারোক্তি দেন কাউসার। পরে তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩২ ঘণ্টা, মে ০৯, ২০২৩
এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।