ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

হাতিয়ায় রামগতির এএসপি ও ওসি অবরুদ্ধ 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩৩ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২৩
হাতিয়ায় রামগতির এএসপি ও ওসি অবরুদ্ধ 

নোয়াখালী: নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার হরনী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড টাংকির ঘাট এলাকায় উত্তেজিত জনতা লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) সাইফুল আলম চৌধুরী ও রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেনকে অবরুদ্ধ করে রাখে। এসময় বিক্ষোভ মিছিল করে স্থানীয় লোকজন।

বৃহস্পতিবার (১১ মে) সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত কয়েক হাজার লোকের উপস্থিতিতে উপজেলার টাংকির ঘাট এলাকায় পুলিশ ক্যাম্পে এ ঘটনা ঘটে। পরে নোয়াখালী সদর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করেন।

নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) বিজয়া সেন বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয়রা জানায়, বিকেলে লক্ষ্মীপুর জেলা সহকারী পুলিশ সুপার (রামগতি সার্কেল) সাইফুল আলম চৌধুরী ও রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন টাংকির বাজার পুলিশ ক্যাম্পে আসেন। পরে তাঁরা ক্যাম্পের পুলিশ সদস্যদের নিয়ে ক্যাম্পের গোল ঘরে বসেন।  

এর কিছুক্ষন পর ওই গোল ঘরে আসেন স্থানীয় ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মাইন উদ্দিন, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. বাবুল হোসেন সুজন ও টাংকির বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাখওয়াত হোসেন। পরে পুলিশ গোল ঘর থেকে তাদের বের করে দিলে বিষয়টি বাজারে উপস্থিত লোকজনের নজরে আসে এবং তারা উত্তেজিত হয়ে ক্যাম্প ঘেরাও করে। কিছু সময়ের মধ্যে স্থানীয় কয়েক হাজার লোক একত্রিত হয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করতে থাকে। যা রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলে।

হরনী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য (মেম্বার) মো. বাবুল হোসেন সুজন অভিযোগ করে বলেন, বিকেলে টাংকির বাজার পুলিশ ক্যাম্পে আসেন রামগতি সার্কেল ও রামগতি থানার ওসি। উনাদের দেখে আমি, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সালা উদ্দিন মেম্বার, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মাইন উদ্দিন মেম্বার ও সাখাওয়াত মাস্টার ক্যাম্পের গোল ঘরে যাই। এসময় আমাদের দেখে উত্তোজিত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে বের হয়ে যেতে বলেন সহকারী পুলিশ সুপার সাইফুল আলম চৌধুরী। একপর্যায়ে তিনি আমাদের দিকে তেড়ে এসে আমাকে ধাক্কা দিয়ে ওই কক্ষ থেকে বের করে দেন।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, উনারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে রামগতি থেকে হাতিয়ায় এসেছেন। এর আগেও একাধিকবার রামগতির পুলিশ ও লোকজন বিভিন্ন সময় আমাদের সীমানায় এসে আমাদের লোকজনকে মারধর করেছে। আমাদের লাঞ্ছিত করা ও তাদের কর্তৃক হয়রানি থেকে স্থায়ীভাবে রক্ষা পেতে লোকজন তাদের অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।

টাংকির ঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাখওয়াত বলেন, মেম্বাররা সহ আমি ক্যাম্পের গোল ঘরে গেলে সার্কেল সাহেব মেম্বারদের ওপর উত্তেজিত হয়ে সবাইকে বের হয়ে যেতে বলেন। পরে আমরা দ্রুত ওইস্থান থেকে বের হয়ে চলে আসি।

রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন, সন্ধ্যায় আমাদের নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবে আমাদের অধিনে থাকা টাংকির ঘাট ক্যাম্পে আসি। ক্যাম্পে আমাদের মিটিং চলাকালে স্থানীয় মেম্বাররা এলে আমরা উনাদের পরে আসতে বলি। কিন্তু উনারা বাইরে গিয়ে মানুষকে ভুল বুঝিয়ে উত্তেজিত করে পরিস্থিতি ঘেলাটে করেছে।

রামগতি সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সাইফুল আলম চৌধুরী মেম্বারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ ও ধাক্কা দেওয়ার বিষয়টি সত্য নয় উল্লেখ করে বলেন, টাংকির বাজার ক্যাম্পের পাশে নোয়াখালী অঞ্চলে আরও একটি আরআরএফ (রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্স) ক্যাম্প রয়েছে। আমরা ক্যাম্পের গোল ঘরে রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্সদের নিয়ে মিটিং এ বসার কিছুক্ষণ পর কোনো কিছু না বলে একজন লোক বসে পড়েন। আমি উনার পরিচয় জানতে চাইলে তিনি মাইন উদ্দিন মেম্বার বলে পরিচয় দেন। আমি উনি এবং সঙ্গে থাকা উনার লোকদের পরে আসার জন্য বলি। কিন্তু উনারা বিষয়টিকে ভিন্ন খাতে নিতে লোকজনকে উত্তেজিত করে তোলেন। এ ঘটনাটি রামগতি ও হাতিয়ার সীমানা বিরোধের যোগসূত্র থাকতে পারে।  

বাংলাদেশ সময়: ঘণ্টা, মে ১২, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।