বাগেরহাট: ফ্রিল্যান্সারদের নানা সমস্যা সমাধানে সরকারিভাবে পরিচয়পত্র দেওয়া হবে জানিয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, এসব কার্ডধারী ফ্রিল্যান্সারদের মূল আয়ের সঙ্গে সরকার অতিরিক্ত ৪ শতাংশ টাকা দেবে। সেই সঙ্গে খুব অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে ইন্টারন্যাশনাল পেমেন্ট গেটওয়ে পে-পাল চালু করা হবে।
তিনি জানান, ফ্রিল্যান্সারদের প্রাণের দাবি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী এটা চালুর উদ্যোগ নিয়েছেন।
শুক্রবার (১২ মে) দুপুরে বাগেরহাট জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত স্মার্ট কর্মসংস্থান মেলায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ফ্রিল্যান্সাররা কাজ করে নিজে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি দেশের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছেন। কিন্তু পেশা হিসেবে এটি এখনো সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়নি। যে কারণে ফ্রিল্যান্সারদের নানা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয়। এ সমস্যা সমাধানে ফ্রিল্যান্সারদের সরকারিভাবে পরিচয়পত্র দেওয়া হবে এবং কার্ডধারী ফ্রিল্যান্সারদের মূল আয়ের সঙ্গে সরকার অতিরিক্ত ৪ শতাংশ টাকা দেবে। সেই সঙ্গে খুব অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে ইন্টারন্যাশনাল পেমেন্ট গেটওয়ে পে-পাল চালু করা হবে।
স্মার্ট বাগেরহাট গড়ার জন্য যা যা প্রয়োজন, প্রধানমন্ত্রী তার সবই করবেন জানিয়ে জুনাইদ আহমেদ পলক আরও বলেন, বাগেরহাটের শিক্ষিত যুবকদের কর্মসংস্থানের জন্য জেলা সদরে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন করা হবে। সেই সঙ্গে প্রতিটি উপজেলায়ও তথ্য প্রযুক্তি ও ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে প্রশিক্ষণ সেন্টার করা হবে। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতি বছর কয়েক হাজার দক্ষ ফ্রিল্যান্সার বের হবে। যারা নিজেরা আয় করার পাশাপাশি অন্যদেরও কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করতে পারবেন।
এর আগে দিনব্যাপী এই স্মার্ট কর্মসংস্থান মেলার উদ্বোধন করেন বাগেরহাট-২ (কচুয়া-সদর) আসনের সংসদ সদস্য শেখ তন্ময়।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমানের সভাপতিত্বে স্মার্ট মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) আসনের সংসদ সদস্য অ্যাড. আমিরুল আলম মিলন, পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল ইসলাম, ব্রাক (কুমন) প্রধান নেহাল বিন হাসান প্রমুখ।
আইসিটি ডিভিশন, ডিজিটাল বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর, এটুআই, আইডিয়া, ইডিজিই আয়োজিত দিনব্যাপী এই মেলায় ৩৫টি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান তাদের স্টল সাজায়। শিক্ষিত ও দক্ষ তরুণ-তরুণীরা এখানে চাকরির জন্য নিবন্ধন করেন এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্টলে তাদের জীবন বৃত্তান্ত দেন।
পরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের চাহিদা অনুযায়ী মেলার স্টলে বসেই অনেক প্রার্থীর চাকরি নিশ্চিত করেছে।
এছাড়া মেলা উপলক্ষে আইসিটি ডিভিশনের পক্ষ থেকে ২০ জন ফ্রিল্যান্সারকে ২০টি ল্যাপটপ এবং ৪০ জন উদ্যোক্তাকে নগদ ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। মেলায় বাগেরহাটের কয়েক হাজার তরুণ-তরুণী অংশগ্রহণ করেন।
বাগেরহাটে এই প্রথমবারের মতো স্মার্ট কর্মসংস্থান মেলার আয়োজন করায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ফ্রিল্যান্সার ও বেকার তরুণ-তরুণীরা। হাফিজুল ইসলাম নামের এক সফল ফ্রিল্যান্সার বলেন, বাগেরহাটে এমন একটি মেলার আয়োজনে আমাদের অনেক উপকার হয়েছে। বাগেরহাটের মানুষ জানতে পেরেছে ফ্রিল্যান্সিং একটি ভালো পেশা। এছাড়া অনেক তরুণ-তরুণী এই পেশায় আশারও আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
রুহুল আমিন নামের আরেক যুবক বলেন, শুধু মেলার আয়োজন নয়, বেকার সমস্যা দূর করতে হলে যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ সেন্টারে বিনামূল্যে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৫ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২৩
এনএস