ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সময়ের আগেই দিনাজপুরের বাজারে আধাপাকা লিচু

মো. মোস্তাফিজুর রহমান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫২ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০২৩
সময়ের আগেই দিনাজপুরের বাজারে আধাপাকা লিচু

দিনাজপুর: কাটারিভোগ ধান আর বিভিন্ন জাতের লিচুর জন্য দেশ জুড়েই নাম ডাক রয়েছে উত্তরের জেলা দিনাজপুরের। মে মাসের শেষ দিক থেকে জুন পর্যন্ত লাল রঙ্গে আচ্ছাদিত থাকে জেলার লিচু বাগানগুলো।

তবে এবার সময়ের আগেই বাজারে দেখা মিলছে লিচুর।

বৃহস্পতিবার (১১ মে) শহরের বাহাদুর বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে লিচু বিক্রি করতে দেখা গেছে। এসব লিচুর বেশিরভাগই আধাপাকা ও কাঁচা। তীব্র দাবদাহে লিচু ঝরে পড়ে পড়ায় সময়ের আগেই চাষিরা এগুলো বিক্রি করছেন বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আর এসব আধাপাকা ও কাঁচা লিচুতে স্বাস্থ্য ঝুঁকি আছে বলে জানান জেলা সিভিল সার্জন।

বাহাদুর বাজারের ফল ব্যবসায়ী দুলাল বলেন, এ মৌসুমে আজকে প্রথম আমি লিচু কিনে বিক্রি করছি। লিচুর আকার ভেদে প্রতি হাজার লিচু ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা দরে কিনছি। পরিবহন ও অন্যান্য খরচ আছে। আমরা ক্রেতাদের কাছে প্রতি ১০০ লিচু ২২০ থেকে ২৮০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছি। যে লিচুগুলো এখন বাজারে উঠেছে এগুলো আরও কয়েকদিন পরে উঠতো। কিন্তু এবার প্রচণ্ড রোদ আর কম বৃষ্টির কারণে লিচুতে আগেই রঙ আসছে। এছাড়া লিচু ঝরে পড়ছে ও ফেটে যাচ্ছে। তাই চাষিরা সঠিক সময়ের আগেই বিক্রি করে দিচ্ছেন।

দিনাজপুর শহরের হকার্স মাকের্টের সামনে লিচু বিক্রি করছেন ব্যবসায়ী রানা। কথা হলে তিনি বলেন, আবহাওয়ার কারণে গেল বছরের তুলনায় এবার এক সপ্তাহ আগেই লিচুর রঙ এসেছে। বৃষ্টিপাত না থাকা ও অনেক রোদ থাকায় লিচুর আকার বেশি বড় হচ্ছে না। বাজারে যে লিচুগুলো উঠছে বাজারে এগুলো এখনও পরিপূর্ণ হয়নি। হালকা টক আছে । কয়েকদিন পর মাদ্রাজি জাতের লিচু ভালোভাবে পাকবে। এর মাঝে যদি বৃষ্টি হয় তাহলে লিচুর দানা ভালো হবে আর মিষ্টিও বাড়বে।

তিনি আরও বলেন, এ বছর লিচুর দাম ভালো থাকলেও ফলন কিছুটা কম। আজকে প্রতি হাজার লিচু ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা দরে কিনেছি। আর ২ হাজার ৫০০ টাকা দরে ঢাকার ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেছি। এসব লিচু বাজারে না তুললে সেগুলো নষ্ট হয়ে যেত। গত বছরের তুলনায় এ বছর লিচুর মৌসুম ৭ থেকে ১০ দিন আগেই শেষ হয়ে যেতে পারে।

লিচু ক্রেতা ফারুক হোসেন বলেন, নতুন ফল উঠেছে বলে বাচ্চাদের জন্য ২২০ টাকা দিয়ে ১০০টি লিচু কিনেছি। লিচু খেয়ে দেখলাম কিছুটা টক আছে। নতুন ফল, বাচ্চারা খাবে তাই নিতেই হলো। আর কয়েকদিন গেলে তখন বাজারে ভরপুর লিচু উঠবে।

লালমনিরহাট থেকে অফিসের কাজে এসেছিলেন মাধব চন্দ্র। এ সময় লিচু দেখে ১০০টি কেনেন তিনি। কথা হলে তিনি জানান, অফিসের কাজে আমি লালমনিরহাট থেকে দিনাজপুরে এসেছি। বাজারে লিচু দেখে পরিবাবের জন্য কিনলাম। ১০০টি লিচুর দাম ২৫০ টাকা নিয়েছে। এখনও ভালোভাবে লিচু উঠেনি। যেগুলো উঠেছে সেগুলোর মান মোটামুটি ভালো। আধা পাকা হওয়ায় লিচুর স্বাদ একটু টক আছে। তবুও নতুন ফল হিসেবে কিনলাম।

আধাপাকা লিচুতে স্বাস্থ্য ঝুঁকি আছে। এ লিচু খেলে মৃত্যুও হতে পারে বলে জানান জেলা সিভিল সার্জন কর্মকর্তা এ এইচ এম বোরহান-উল ইসলাম সিদ্দিকী। তিনি বলেন, আধাপাকা লিচু স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। আধাপাকা লিচুতে এক ধরনের বিশেষ এনজাইম থাকে। খালি পেটে এই লিচু খেলে ওই এনজাইমের প্রভাবে পেট ব্যথা, বিভিন্ন ধরনের অসুস্থতা এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। বিশেষ করে ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এটি মারাত্বক ঝুঁকিপূর্ণ। তাই সবাইকে আধাপাকা লিচু না খাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫১ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০২৩
এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।