ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

গাজীপুর সিটি নির্বাচন

মৃত্যু কিংবা জেল ছাড়া সরে দাঁড়ানোর পথ নেই: জাহাঙ্গীর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৬ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০২৩
মৃত্যু কিংবা জেল ছাড়া সরে দাঁড়ানোর পথ নেই: জাহাঙ্গীর

গাজীপুর: গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, গাজীপুরের মানুষ আমার মাকে নগরীর মা বলে। আমার মাকে যেহেতু সবাই মা বলেছে, তাই তারা ২৫ তারিখ শুধু আমার মাকে ভোট দেওয়ার জন্য যাবে।

আমার মা লাখ লাখ ভোটে জয়লাভ করবেন।

এসময় তিনি ‘মৃত্যু কিংবা জেল ছাড়া নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর পথ নেই’ বলেও মন্তব্য করেন।

মঙ্গলবার (১৬ মে) গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ছয়দানা এলাকার নিজ বাসায় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে সাবেক মেয়র এসব কথা বলেন।

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে জাহাঙ্গীর আলম ও তার মা জায়দা খাতুন মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। খেলাপি ঋণের দায়ে জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। কিন্তু বৈধ হয় তার মায়ের মনোনয়নপত্র। আদালতে আপিল করেও প্রার্থিতা ফিরে পাননি সাবেক এই মেয়র। যে কারণে তিনি এখন মা জায়দা খাতুনের পক্ষে নির্বাচন করছেন এবং মাকে নিয়েই ভোটের মাঠে নেমেছেন।  

এদিকে, সোমবার (১৫ মে) সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে আওয়ামী লীগ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়।  

এ বিষয়ে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দল যে সিদ্ধান্ত নেয়, তা আমি মানি। বহিষ্কারের বিষয়ে আমার সঙ্গে আলোচনা হয়নি। ফেসবুক, মিডিয়ার মাধ্যমে জেনেছি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন থাকবে, দীর্ঘ দেড় বছরে কী হয়েছে, না হয়েছে এজন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে, কেন্দ্রীয় নেতাদের সবার কাছে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। আমি শুধু প্রধানমন্ত্রীর কাছে যেতে চেয়েছিলাম, আমার অপরাধটা কী? এটা সামনা সামনি জানতে চেয়েছিলাম। কেন্দ্রীয় নেতারা আশ্বাস দিয়েছিলেন, কিন্তু আমার বিশ্বাস আমার বিষয়ে তারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে বলেন নাই।  

তিনি আরও বলেন, আমাকে কী কারণে বা কেন বহিষ্কার করা হয়েছে, সে বিষয়ে এখনো পর্যন্ত আমি কোনো চিঠি পাইনি। তাই এটা নিয়ে কিছু বলতে পারছি না। মিডিয়ার মাধ্যমে জেনেছি, আমি স্থায়ীভাবে বহিষ্কার হয়েছি। আমার পার্টির ব্যাপারে কোনো মন্তব্য নাই। পার্টির সিদ্ধান্তে আমি কোনো আলোচনা সমালোচনা করবো না। তবে আমার ওপর অন্যায় করা হয়েছে, মিথ্যা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটা ঠিক হয়নি।

বরখাস্ত হওয়া এই মেয়র বলেন, আমি ৬ বছর গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। ৩ বছর মেয়র ছিলাম। সে হিসেবে তাদের আমার কথা অন্তত ২ মিনিট শোনার দরকার ছিল। আমার সঙ্গে অবিচার করা হয়েছে। যতক্ষণ পর্যন্ত নেত্রীর কাছে না বলতে পারবো, নেত্রী যা বলেন আমি শুনবো। কিন্তু আমার কথাটা তো তাকে শুনতে হবে। সত্য যেন প্রতিষ্ঠিত হয়, মিথ্যার ধ্বংস হয়।  

আসন্ন সিটি নির্বাচন নিয়ে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, নির্বাচনে আমি একটা কঠিন জায়গার মধ্যে আছি। একটা হলো আর্দশের যায়গা, আমার পার্টি আওয়ামী লীগ, নৌকা এবং প্রধানমন্ত্রী- এই তিনটা জায়গা আমার পছন্দের। একজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমার মা এটার প্রতিবাদ করেছেন। আমার মা বলছেন, এই শহরের প্রতি অবিচার করা হয়েছে। মা আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন, সেজন্য সন্তান হিসেবে আমি কি মায়ের সঙ্গে থাকবো, নাকি আজমত উল্লার সঙ্গে থাকবো? নীতিগতভাবেই আমাকে আমার মায়ের সঙ্গে থাকতে হয়।

জাহাঙ্গীর আলম আরও বলেন, আমি যেতেতু আওয়ামী লীগ করি। সেজন্যই যারা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠন করেন, তারা অনেকেই আমার মা ও আমার পক্ষে প্রচরণায় অংশ নেন। কিন্তু সেখানে তাদের থ্রেড দেয়, বহিষ্কার করে। বিভিন্ন কৌশলে তাদের হুমকি দিচ্ছে। আমি চাই, এই লাখ লাখ মানুষকে যেন হয়রানি না করা হয়। সকল প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে বলবো, জনগণ যে রায় দেয়, জনগণ যেহেতু শহরের মালিক, তাই তাদের বিরুদ্ধে যেন অবস্থান না নেয়া হয়। ভোটের জায়গায় যেন কোনো পক্ষপাতিত্ব না হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৭ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০২৩
আরএস/এনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।