ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

শাহজালাল (রহ.) ওরস: লাকড়ি তোড়ার ভাঙার সাতশ’ চার বছরের ইতিহাস

নাসির উদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০৯ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০২৩
শাহজালাল (রহ.) ওরস: লাকড়ি তোড়ার ভাঙার সাতশ’ চার বছরের ইতিহাস

সিলেট: আগামী ৮ ও ৯ জুন হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজারে ৭০৪ তম ওরস মোবারক। আর উরস এলেই সব মানুষের মিলনমেলায় শুরু হয় লাকড়ি তোড়া উৎসব।

যে উৎসবে যোগ দিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসেন ভক্ত আশেকানরা।  

কেবল করোনাকালের দুই বছর বাদে সাতশ’ চার বছরের ইতিহাসে কখনো বন্ধ ছিল না লাকড়ি তোড়া উৎসব। ওরস এলেই শিরনির জন্য প্রতিকী হিসেবে সাতশ’ বছরে আধিক সময় ধরে পালিত হয়ে আসছে লাকড়ি সংগ্রহ উৎসব।

 বুধবার (১৭ মে) বাদ যোহর জালালী গান গেয়ে ভক্ত-আশেকানরা লাল কাপড় গায়ে জড়িয়ে অংশ নেন লাকড়ি তোড়া বা লাকড়ি ভাঙা উৎসবে। কেউ বাদ্যযন্ত্র সহকারে, কেউ খালি গলায় তুলেছেন ভক্তিমূলক ও দেহতত্ত্ব গানের সুর।

যোহর নামাজের পর দরগাহে মিলাদ শেষে নাগড়া বাজার সঙ্গে সঙ্গে ভক্তরা শহরতলির লাক্কাতোড়া ও মালনিছড়া চা বাগানে শোভাযাত্রা নিয়ে যান। লাকড়ি সংগ্রহ করে ফের স্লোগান দিয়ে ফিরেন মাজারে।

মাজারের পুকুরে লাকড়ি ধুয়ে নির্ধারিত স্থানে রেখে দেন তারা। এসব লাকড়ি বা কাঠ ওরসে শিরনির রান্নার কাজে প্রতিকী হিসে্বে এসব লাকড়ি ব্যবহৃত হবে। তারা গানের তালে মাতিয়ে রাখেন আগন্তক দর্শনার্থীদের।

হযরত শাহজালাল মাজারে লাকড়ি ভাঙা উৎসবে যোগ দিতে আসা ভক্তরা বলেন, ৩৬০ আউলিয়ার শিরোমনি হযরত শাহজালাল (র.) ওফাতের আগে থেকেই ওরস ঘিরে লাকড়ি তোড়া উৎসব পালিত হয়ে আসছে।

প্রায় ৭০৪ বছরের ইসিতাসের চিরায়ত এই নিময় এখনো পালিত হচ্ছে। ভক্ত-আশেকানদের মতে, শ্রমের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা ও আভিজাত্যের গৌরব ধ্বংসের শিক্ষা নিয়ে এ উৎসব উদযাপন হয়।

দরগাহ হযরত শাহজালাল মজররদ ইয়ামনী (র.) মাজারের সরেকওম (মোতাওয়াল্লী) কর্তৃক ছাপানো লিফলেট দিয়েও ওরসের তথ্য প্রচার করা হয়।

হযরত শাহজালাল (রহ.) ১৩০৩ খ্রিস্টাব্দে ৩৬০ সফরসঙ্গী নিয়ে ইসলাম প্রচারের জন্য সিলেট আসেন। ১৩৪৬ খ্রিস্টাব্দে ১৯ জিলকদ তিনি ইন্তেকাল করেন। সিলেটে তিনি যে টিলায় বসবাস করতেন সেখানেই তাকে দাফন করা হয়। এই মাজার সারা বছরই ভক্ত আশেকান ও দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর থাকে। হযরত শাহজালাল (র.) জীবদ্দশা থেকে প্রতি ওরসের ৩ সপ্তাহ আগে এভাবে লাকড়ি তোড়া উৎসব করা হতো। সে চিরায়ত ঐতিহ্য আজো বহমান।

বাংলাদেশ সময়: ০১০৫ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০২২
এনইউ/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।