ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

সৌদিতে আশিকের মৃত্যু: লাশ ফেরত পেতে সরকারের সাহায্য প্রার্থনা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩২ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০২৩
সৌদিতে আশিকের মৃত্যু: লাশ ফেরত পেতে সরকারের সাহায্য প্রার্থনা আশিক মুন্সী

ফরিদপুর: দরিদ্র পরিবারে একটু হাসি ফুটাতে ধার-দেনা করে ৮ মাস আগে সৌদি আরবের আমিরাতে পাড়ি জমান আশিক মুন্সী (২১) নামে এক তরুণ। সেখান গিয়ে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি।

ভালোই চলছিল তার আয়-রোজগার। পরিবারেও ফুটতে শুরু করেছিল হাসির ঝিলিক। কিন্তু আশিক যখন ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে মরিয়া ঠিক তখন ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে কর্মস্থলেই তার রহস্যজনক মৃত্যু হয়।

হতভাগা আশিক ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার পুরাপাড়া ইউনিয়নের বনগ্রাম গ্রামের দরিদ্র কৃষক মিজানুর রহমান মুন্সীর ছেলে। আশিকরা দুই ভাই এক বোন। আশিক সবার বড়। গত ১২ মে আশিকের বাবা-মা জানতে পারেন, তাদের আদরের কর্মঠ ছেলে আর নেই। আশিকের মৃত্যুর খবরে তার বাবা-মা ও দাদা-দাদিসহ স্বজনরা শোকে নিস্তব্ধ হয়ে গেছেন। পুরো গ্রামে নেমে আসে শোকের ছায়া।

আশিকের মা হাসি বেগম বলেন, আমাদের বাড়ি ছাড়া কোনো জমি নেই। আমার স্বামী কৃষিকাজ করে সংসার চালান। এমন অবস্থায় আমাদের দরিদ্র পরিবারে একটু আর্থিক সচ্ছলতা ফেরাতে ও হাসি ফুটাতে ধার-দেনা করে আশিককে সৌদি পাঠাই। ৮ মাস আগে পার্শ্ববর্তী কোদালিয়া শহীদনগর ইউনিয়নের খুদুরিয়া গ্রামের জাফর ফকিরের ছেলে হেলাল ফকিরের মাধ্যমে আশিক বিদেশে যায়। সৌদি আরবের দাম্মামে রাজমিস্ত্রির হেলপার হিসেবে পাইপ-লাইনের কাজ করতো আশিক।

গত ১১ মে দিবাগত রাত ১২টার দিকে আমাদের সঙ্গে আশিকের মোবাইল ফোনে শেষবারের মতো কথা হয়। পরের দিন ১২ মে বিকালে সৌদি আরব থেকে এক ব্যক্তি ফোন করে আমাদের খবর দেয় আশিক মারা গেছে। তবে কীভাবে মারা গেছে তা জানাতে পারেনি ওই ব্যক্তি। আমার ছেলের লাশের ছবিও পাঠিয়েছেন তিনি। কিন্তু এখনও আমার ছেলের লাশ দেশে আনার ব্যাপারে কোনো উপায় খুঁজে পাচ্ছি না।

আশিকের বাবা মিজানুর রহমান মুন্সী বলেন, আমার ছেলের লাশ বাংলাদেশে এনে বাড়ির পাশে দাফন করতে চাই। কিন্তু কীভাবে দেশে আনবো, আমাদের জানা নেই। আমার ছেলের লাশ দেশে আনার জন্য আমি সরকারের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করছি। আমার সুস্থ সবল ছেলেটা এভাবে মারা যেতে পারে না। কে বা কারা আমার ছেলেকে হত্যা করেছে তা তদন্ত করে হত্যাকারীদের শনাক্ত করে বিচার দাবি করছি।

নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মঈনুল হক বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের কাছে আশিকের পরিবার যোগাযোগ করলে ও লাশ চেয়ে আবেদন দিলে আমরা প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কাজ করবো।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩২ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০২৩
জেএইচ


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।