ঢাকা: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের দ্বিতীয় পর্যায়ে তহবিল সংগ্রহের সূচনা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। যে কেউ যেকোনো পরিমাণ টাকা অনুদান হিসেবে প্রদান করে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের উন্নয়নের অংশীদার হতে পারবেন।
শনিবার (২০ মে) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অডিটোরিয়ামে আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে এ কার্যক্রম শুরু হয়।
অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ডা. সারোয়ার আলী। বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ও সদস্য সচিব সারা জাকের।
উদ্যোক্তা সদস্যদের স্মারক প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন, বিকাশের সিইও কামাল কাদীর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক।
অনুষ্ঠানে সমাপনী এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে ট্রাস্টি এবং সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর।
আলোচনা সভায় সারা যাকের বলেন, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ব্যক্তি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের যাত্রা পথে আমরা ব্যাংকের এবং রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছি, সব থেকে বড় কথা, আমরা দেশের মানুষকে পাশে পেয়েছি। এভাবেই আমরা আমাদের বর্তমান এই ভবনটি করেছি। আমাদের এখন মনে হচ্ছে, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের কার্যক্রম আরও বেশি পরিসরে করতে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের দ্বিতীয় পর্যায়ের তহবিল সংগ্রহে নেমেছি। আমাদের দায়িত্ব মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের জন্য একটি ভালো তহবিল, শক্ত একটা ভীত রেখে যাওয়া ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যে। আমরা মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরকে আর্থিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে চাই।
আসাদুজ্জামান নুর বলেন, আমরা আটজন ট্রাস্টি সেগুনবাগিচায় একটি ভাড়া বাড়িতে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের যাত্রা শুরু করেছিলাম। শুরু থেকেই আমরা একটা কথাই বলার চেষ্টা করেছি, কে প্রতিষ্ঠা করেছে এই জাদুঘর সেটি বড় কথা নয়, এই জাদুঘর এদেশের মানুষের জনগণের জাদুঘর। সেই ভাবনে নিয়েই আমরা সবসময় অগ্রসর হওয়ার এবং সব মানুষকে সম্পৃক্ত করবার চেষ্টা করেছি।
আলোচনা সভা শেষে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের স্থাপনা সদস্য (১৫ লাখ টাকা) সারওয়াত সিরাজ শুক্লা, উদ্যোক্তা সদস্য (পাঁচ লাখ টাকা), ডা মাখদুমা নার্গীস, অধ্যাপক হাফিজা খাতুন, আবুল হাসান মাসুদ, অধ্যাপক লতিফা শামসুদ্দিন, শ্রিয়া সর্বজয়া, ঈরেশ জাকের, আনোয়ারুল কাদের, মো. মোরশেদ আলমসহ আজীবন সদস্য (এক লাখ টাকা), সাধারণ সদস্য (২৫ হাজার টাকা) এবং প্রতীকী ইট কেনাকারিদের (১০ হাজার টাকা) স্মারক দেওয়া হয়।
উদ্যোক্তা সদস্য আনোয়ারুল কাদিরের পক্ষে স্মারক নেন বিকাশের সিইও কামাল কাদীর।
এ সময় তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময়ে আমাদের বাড়িঘর লুটপাট হয়েছে, জানমালের কোনো ক্ষতি হয়নি আমাদের পরিবারে। মুক্তিযুদ্ধের ছয় মাস পরেই একটা ফেরি অ্যাক্সিডেন্টে আমার বাবার মৃত্যু হয়। গত বছর আমার বাবার মৃত্যুবার্ষিকীতে আমি এবং আমার স্ত্রী ভাবলাম অন্য কিছু না করে যদি মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের জন্য কিছু করা যায় কিনা। আমি আশা করবো, আমরা সবাই যেন এভাবেই মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের উন্নয়নে এগিয়ে আসি।
অনুষ্ঠান থেকে আরো জানানো হয়, যে কেউ চাইলে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের স্থায়ী ফান্ড গঠনে ১০ হাজার টাকায় প্রতীকী ইট ক্রয়, ২৫ হাজার টাকায় সাধারণ সদস্য, ১ লাখ টাকায় আজীবন সদস্য, ৫ লাখ টাকায় উদ্যোক্তা সদস্য, ১৫ লাখ টাকায় স্থাপনা সদস্য, ৫০ লাখ টাকায় পৃষ্ঠপোষক সদস্য, ১ কোটি টাকা বা তদুর্ধ্ব সম্মানীয় পৃষ্ঠপোষক সদস্য হতে পারবেন।
পৃষ্ঠপোষক সদস্য স্থাপনা সদস্য, উদ্যোক্তা সদস্য, আজীবন সাধারণ সদস্য ও প্রতীকী ইট ক্রেতাদের নাম জাদুঘরের ভবনে স্থায়ীভাবে প্রদর্শিত হবে এবং দেওয়া হবে স্মারক।
এছাড়াও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর তহবিলে যেকোনো পরিমাণ অর্থ সাহায্য কৃতজ্ঞচিত্তে গ্রহণ করা হবে। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অনুদান পাঠানোর বিকাশ একাউন্ট নাম্বার ০১৭১২২৭২৬০২। পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ফান্ড মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড, প্রধান শাখা হিসাব নম্বর ১১০১ ১৩১ ২৫২৬৪০৬৩ এবং রাউটিং নম্বর ১৪০২৭৫৩৫৩ পাঠানো যাবে অনুদান।
বাংলাদেশ সময়: ২২১০ ঘণ্টা, মে ২০, ২০২৩
আরকেআর/এএটি