সাতক্ষীরা: দুই সপ্তাহের ব্যবধানে সাতক্ষীরার বাজারে পেঁয়াজের দাম ৪৫ টাকা থেকে বেড়ে ৭০ টাকা হয়েছে। সেই সঙ্গে আদার দাম ১৪০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৩০০ টাকা।
এভাবে নিত্যপণ্যের দাম হু হু করে বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। চাকরিজীবী থেকে শুরু করে শ্রমজীবী মানুষ কেউই স্বস্তিতে নেই। সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন খেটে-খাওয়া মানুষগুলো।
তারা বলছেন, প্রতিটি জিনিসের দাম যেভাবে বেড়েছে, তাতে করে পরিবারের সদস্যদের জন্য তিন বেলা পরিমাণ মতো খাবার জোটানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে। ওষুধ থেকে শুরু করে লবণ পর্যন্ত- এমন কোনো পণ্য নেই যার দাম মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে দুই তিন গুণ বাড়েনি।
শুক্রবার (২৬ মে) সাতক্ষীরার সুলতানপুর বড় বাজারে গেলে সাধারণ মানুষরা এমনই জানান।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রসুন ১১০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১৫০ টাকা। কাঁচা মরিচ ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
বাজারের এমন পরিস্থিতিতে বিক্রেতারা যে স্বস্তিতে আছেন সেটিও কিন্তু না। বেচা-কেনা কমে যাওয়ায় তারাও অস্বস্তিতে পড়েছেন। ক্রেতা সাধারণকে বোঝানো কষ্টকর হয়ে পড়ছে তাদের জন্য।
সুলতানপুর বড় বাজারে নিত্য পণ্য কিনতে আসা আমেনা বেগম বলেন, বাজারে সবকিছুরই দাম বেশি। বাধ্য হয়ে টেম্পার নষ্ট হয়ে যাওয়া পচা পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে। তাও ৭০ টাকা কেজি। উপায় নেই। বাজার যেন পাগলা ঘোড়া। সবকিছুর দাম হু হু করে বেড়েই যাচ্ছে।
বাজার করতে আসা খলিল শেখ বলেন, পেঁয়াজ রসুন আদার দাম অনেক বেড়ে গেছে। সবকিছুর দাম এত বেশি যে ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। আমাদের যে ইনকাম, তা দিয়ে মাসের ১০ দিনের বাজারও হয় না।
খলিল শেখের পাশে দাঁড়ানো এনামুল নামে একজন চেচিয়ে বলেন, আমরা গরিব মানুষ। কোনো কিছুতেই হাত দেওয়া যাচ্ছে না। আজকে যে জিনিসের দাম ১০ টাকা, কাল তার দাম ৩০ টাকা। এমন করে দাম বাড়লে মানুষ বাঁচবে কী করে?
মনিরুল ইসলাম (ছদ্মনাম) নামের এক সরকারি চাকরিজীবী বলেন, বেতনের টাকায় মাস শেষে বাড়ি ভাড়া, সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ দেওয়ার পর যা থাকে তাতে মাসের বাজার হচ্ছে না। মানসিক প্রেসারে দিন যাচ্ছে। কোনো উপায় পাচ্ছি না।
সুলতানপুর বড় বাজারের মোল্লা ভাণ্ডারের মালিক আজিজুর রহমান বলেন, আগের তুলনায় এখন পেঁয়াজ, রসুন, আদা সবকিছুরই দাম বেশি। কারণ আমরা এসবের সরবরাহ ঠিকমতো পাচ্ছি না। যা পাচ্ছি তা অনেক বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। মানুষকেও বোঝাতে পারছি না। প্রতিদিনই দাম বাড়ছে।
তিনি আরও বলেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ না আসার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এলসি ছাড়লে দাম আবার কমে যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৩ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০২৩
এফআর