ঢাকা: ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আলেশা মার্টের চেয়ারম্যান ও পরিচালককে সরকারের নজরদারিতে রেখে গ্রাহকদের পাওনা টাকা পরিশোধসহ ৭ দফা দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
রোববার (২৮ মে) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে ‘আলেশা মার্ট ভুক্তভোগী গ্রাহকবৃন্দের’ ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব দাবি জানান।
তাদের দাবিগুলো হলো-
১) বর্তমান ভুক্তভোগী গ্রাহকের প্রকৃত সংখ্যা এবং তাদের মোট পাওনা টাকার পরিমাণ ওডার আইডিসহ চূড়ান্ত লিস্ট আকারে প্রকাশ করা।
২) ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর থেকে যেভাবে টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছিল ঠিক সেভাবে লিস্ট প্রকাশ করে পুনরায় কার্যক্রম চালু করা।
৩) এস. এস বাইক সপের কর্ণধার মেহেদী মোটরবাইক ডেলিভারি দেওয়ার জন্য আলেশা মার্ট থেকে অগ্রিম ১০-১২ কোটি টাকা নিয়ে পরবর্তীতে বাইক ডেলিভারি করেনি। বর্তমানে তিনি দুবাই পলাতক। তাকে প্রশাসনের মাধ্যমে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে এনে ভুক্তভোগীদের টাকা ফিরিয়ে আনা ও গ্রাহকদের মধ্যে ফেরত দেওয়া।
৪) আলেশা মার্টের চেয়ারম্যান ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে গ্রাহকদের টাকা বিভিন্ন ব্যক্তিকে দিচ্ছে। পরবর্তীতে তারা আর এই টাকা ফেরত দেয়নি। তাই বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং ভোক্তা-অধিকার অধিদপ্তর মঞ্জুর আলম শিকদারের কাছ থেকে তথ্য প্রমাণ নিয়ে এই টাকা ফেরত এনে সাধারণ গ্রাহকদের পাওনা টাকা ফেরত দেওয়া।
৫) আলেশা মার্টের চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম শিকদার ও ডিরেক্টর সাদিয়া চৌধুরীকে আইনের মাধ্যমে গ্রেপ্তার না করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের কঠোর নজরদারিতে রেখে গ্রাহকদের পাওনা টাকা দ্রুত ছাড় করণের ব্যবস্থা নেওয়া।
৬) আলেশা মার্টের চেয়ারম্যান ও পরিচালকরা যেন বিদেশ পালিয়ে না যেতে পারে এর জন্য প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ নেওয়া।
৭) আলেশা মার্টের চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম শিকদারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, আপনার টাকা ফেরত দেওয়ার ইচ্ছা থাকলে সাধারণ গ্রাহকের সঙ্গে কথা বলুন। কিভাবে টাকা দেবেন আমাদের জানান। আমরা সাত হাজার গ্রাহক আপনাকে সহযোগিতা করবো। কিন্তু সব ভুক্তভোগী গ্রাহকের টাকা অবশ্যই আপনাকে ফেরত দিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আলেশা মার্ট কাস্টমার অ্যাসোসিয়েশের সভাপতি সোহান চৌধুরী বলেন, আলেশা মার্ট দেশের একটি বৃহত্তর ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান। আলেশা মার্ট, আলেশা হোল্ডিংস লিমিটডের একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম শিকদার এবং ডিরেক্টর সাদিয়া চৌধুরী। এই প্রতিষ্ঠানটি ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে আত্মপ্রকাশ করে বিজ্ঞাপন ও নিয়মিত ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে গ্রাহকদের নজরে আসে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিষ্ঠানটি গত ২০২১ সালের মে ও জুন মাসে ৩৫ শতাংশ ছাড়ে ই-কমার্স ক্যাম্পেইন আয়োজন করে। আমরা গ্রাহকরা এই ক্যাম্পেইন থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ই-কমার্স নীতিমালা অনুসরণ করে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয় করি। নিয়ম অনুযায়ী ৪৫ দিনের মধ্যে পণ্য ডেলিভারি করার কথা ছিল। প্রতিষ্ঠানটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ডেলিভারি কার্যক্রম শুরু করলেও পরবর্তীতে তা সমাপ্ত করেনি। ফলে আমরা আমাদের কেনা পণ্য বা টাকা বুঝে পাইনি।
তিনি আরও বলেন, আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে জেনেছি এমন ভুক্তভোগী গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় সাত হাজার। যাদের ক্রয়কৃত পণ্য মূল্য প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ কোটি টাকা। অর্থাৎ, গ্রাহকদের পাওনা টাকার পরিমাণ প্রায় দেড়শ কোটি টাকা। আমরা সাধারণ ভোক্তভোগীরা বর্তমানে আমাদের পাওনা টাকা পাওয়ার কোনো কার্যকারী পদক্ষেপ লক্ষ্য করছি না। তাই আমরা এই সরকারের কাছে সাত দফা দাবি জানাচ্ছি।
অনতিবিলম্বে পাওনা টাকা ও দাবি আদায় না হলে পরবর্তীতে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন তারা।
এ সময় আলেশা মার্ট কাস্টমার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রাসেল কবির, সহ-সভাপতি মো. বিপ্লব আলী আরাফাত, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তানভীর আহমেদ, কাস্টমার অ্যাডমিন মো. মানিক হোসেনসহ বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০২৩
এসসি/এসএ