মৌলভীবাজার: শ্রীমঙ্গল উপজেলার বিষামণি এলাকায় ফজল মিয়া নামে এক সাপুড়ের বাড়ি থেকে বিষদাঁতহীন একটি ‘পদ্ম গোখরা’ সাপ উদ্ধার করেছে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ। সরীসৃপটি বর্তমানে বনবিভাগের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ সূত্র জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার (২৯ মে) শ্রীমঙ্গলের প্রত্যন্ত অঞ্চল বিষামণি এলাকার সাপুড়ে ফজল মিয়ার বাড়ি থেকে বিষধর প্রজাতির সাপটিকে উদ্ধার করে হয়। সেটির দাঁত ছিল না। উদ্ধার অভিযানে ছিলেন প্রকৃতিকর্মী সোহেল শ্যাম, বোরহান বিশ্বাস প্রমুখ।
জানা গেছে, জেরিন চা বাগানের শ্রমিকরা হঠাৎ বিষধর সাপটি দেখে ভয় পেয়ে যান। খবর পেয়ে সাপুড়ে ফজল মিয়া সাপটি ধরে ফেলেন। পরে বাড়ি নিয়ে গিয়ে সেটির বিষদাঁত তুলে ফেলেন, যাতে তিনি খেলা দেখাতে পারেন।
মঙ্গলবার (৩০ মে) বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, মৌলভীবাজারের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) শ্যামল কুমার মিত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, পদ্ম গোখরার বিষদাঁত দুটি উপড়ে ফেলায় সেটি অসুস্থ। সাপটি আমাদের চিকিৎসায় রয়েছে। প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র দেওয়া হয়েছে। তাকে খাবার খাওয়ানোর চেষ্টাও করা হচ্ছে। একটু সুস্থ হলেই বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে সাপটিকে আমরা বনে অবমুক্ত করবো।
ভাঙা বিষদাঁত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলে জেনেছি বিষদাঁত তুলে ফেলায় সাপটি অন্তত ২ থেকে ৪ সপ্তাহ কিছুই খেতে পারবে না। দাঁত গজাতে প্রায় ৫ থেকে ৬ মাস সময় লাগবে। এটি প্রাপ্তবয়স্ক গোখরা। লম্বায় প্রায় ৫ ফুটের কাছাকাছি।
ফজল মিয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, তার ভাই সুমন মিয়াও পেশাদার সাপুড়ে ছিল। ২০২২ সালের ১৬ জুলাই জেরিন চা বাগানে বিষধর রাজগোখরা সাপ নিয়ে খেলা দেখানোর সময় সেটির ছোবলেই সুমনের মৃত্যু হয়। পরে আমরা তাদের বাড়ি অভিযান চালাই। সেখান থেকে একটি রাজগোখরা, একটি খৈয়াগোখরা সাপ মৃত অবস্থায় পাই। পরে পুরো বাড়ি তল্লাশি চালিয়ে বসতঘরের মেঝের নিচ থেকে দুটি দাঁড়াস এবং একটি কালনাগিনী সাপসহ মোট তিনটি জীবিত সাপ উদ্ধার করে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে অবমুক্ত করি।
তা ছাড়া ফজলের পরিবার দীর্ঘদিন ধরে বন্যপ্রাণী ব্যবসায় জড়িত। ফজল মিয়ার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৫ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০২৩
বিবিবি/এমজে