নীলফামারী: চাকরির জন্য ছুটেছেন অনেক, দিয়েছেন অনেক প্রতিষ্ঠানে ইন্টারভিউ। ছিল না মামু-খালুদের তদবির, ফলে চাকরি হয়নি বাদশার।
সেই বাদশা সংসারের হাল ধরতে শুরু করেছেন কৃষিকাজ। প্রচণ্ড তাপদাহ ও রোদে পুড়ে ধান কেটে নিয়ে যাচ্ছেন উঠানে। সামান্য আবাদি জমির ফসল দিয়ে কোনো রকমে দিনযাপন করছে তার পরিবার। বাদশা মিয়া কৃষক মহুবার রহমানের ছেলে। অভাবের সংসারে ছয় ভাইবোনের মধ্যে সবার বড়।
২০১৪ সালে তিনি নীলফামারী সরকারি কলেজ থেকে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক পাস করেন। তবে অর্থের অভাবে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করতে পারেননি। এর আগে ২০০৭ সালে বিজ্ঞান বিভাগে দাখিল, ২০০৯ সালে বিজ্ঞান বিভাগে আলিম পাস করেন।
প্রায় ২০টি সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা দেওয়ার পরও চাকরি পাননি নীলফামারীর ডিমলার যুবক বাদশা মিয়া। এভাবে একসময় পার হয়ে যায় সরকারি চাকরির বয়সের সীমা। পরে ক্ষুব্ধ হয়ে ২০২২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে নিজের শিক্ষাজীবনে অর্জিত সব একাডেমিক সার্টিফিকেট ছিঁড়ে ফেলেন। এখন বেকার জীবন কাটিয়ে বাঁচার সংগ্রাম করছেন।
বাদশা বলেন, সনদ ছিঁড়ে ফেলার পর রোজ নামে একটি কুরিয়ার সার্ভিস আমাকে চাকরি দিয়েছিল। কিন্তু সেখানে তিন মাস কাজ করার পর এক মাসের বেতন দেওয়ায় চাকরি ছেড়ে চলে এসেছি। অপরদিকে ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ঢাকায় কনস্ট্রাকশনের কাজে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে শ্রমিক হিসেবে আমাকে দৈনিক হাজিরায় কাজ দেওয়ায় তা ছেড়ে চলে আসি।
এ বিষয়ে ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, চাকরি ছেড়ে চলে আসার বিষয়টি জানা ছিল না। বাদশা যদি চায় তাহলে তাকে আইসিটি কিংবা অন্য কোনো বিষয়ের ওপর প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করা হবে। পরে সেই দক্ষতার ভিত্তিতে চাকরির ব্যবস্থা করা যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৩ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০২৩
এমএমজেড