দিনাজপুর: সুস্বাদু লিচুর জেলা হিসেবে দিনাজপুরের পরিচিতি দেশ জুড়েই। এখানে উৎপাদিত লিচু স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি হয়।
পরীক্ষামূলকভাবে ১৬ হাজার পিস বেদেনা লিচু ফ্রান্সে রপ্তানি করা হচ্ছে। পরের ধাপে সাড়ে পাঁচ লাখ পিস চায়না-থ্রি লিচু পাঠানো হবে। এতে লিচুর বাজারে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলবে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সোমবার (০৫ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় দিনাজপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে দিনাজপুরের লিচু ফ্রান্সে রপ্তানির কার্যক্রম উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আনিছুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) দেবাশীষ চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মেহেদী হাসান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নুরুজ্জামান ও বিরল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান বাবু।
এসময় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রমিজ আলম, বিরল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত ইউএনও) আব্দুল ওয়াজেদ, সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাথী দাস ও বিরল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোস্তফা হাসান ইমাম সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, জেলার বিরল উপজেলার চকভবানী গ্রামের আফজাল হোসেনের বাগান থেকে এই লিচুগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে। সোমবার রাতে প্রশাসনের নিজস্ব পরিবহনের মাধ্যমে ৪০টি ক্যারেটে ১৬ হাজার পিস বেদেনা জাতের লিচু ঢাকার উদ্দেশে পাঠানো হবে। প্রায় ৩০০ কেজি ওজনের এই লিচুগুলো ঢাকায় গিয়ে কার্গোর মাধ্যমে ফ্রান্সে যাবে। মিন্টু ইসলাম নামে এক ব্যক্তি এই লিচুগুলো ফ্রান্সের প্রাইম এশিয়া কোম্পানির স্বত্বাধিকারী শেখ মাসুমের কাছে পাঠাবেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ বলেন, ফ্রান্সসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশে উৎপাদিত শাক ও সবজি পাওয়া যায়। এবার পরীক্ষামূলকভাবে বাংলাদেশ তথা দিনাজপুরের ঐতিহ্যবাহী বেদেনা লিচু ফ্রান্সে পাঠানো হলো। এটি ঠিকভাবে গেলে আগামীতে আরও লিচু রপ্তানি করা হবে।
তিনি আরও বলেন, কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা বাগানে বাগানে গিয়ে ভালো মানের লিচু সংগ্রহ করেছেন। বর্তমানে তীব্র তাপদাহ বইছে। এতে লিচু ফেটে যাওয়াসহ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাই সেই বিষয়গুলোকেও খেয়াল রাখা হচ্ছে। যাতে করে ফ্রান্সে উন্নতমানের লিচু সরবরাহ করা হয়। লিচুগুলো ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ফ্রান্সে পাঠানো হবে। ফ্রান্সে লিচু পাঠানোর বিষয়ে কৃষি কর্মকর্তাসহ প্রশাসনের সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
উল্লেখ্য, জেলা জুড়ে লিচুর চাষ হয় পাঁচ হাজার ৪৯০ হেক্টর জমিতে। মোট লিচুর বাগান আছে পাঁচ হাজার ৪১৮টি। এসব বাগানের মধ্যে বোম্বাই লিচু তিন হাজার ১৭০ হেক্টর, মাদ্রাজি এক হাজার ১৬৬ হেক্টর, চায়না-থ্রি ৮০২ হেক্টর, বেদানা ২৯৫ দশমিক পাঁচ হেক্টর, কাঁঠালি ৫৬ হেক্টর ও মোজাফফরপুরী এক হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়। গত বছর লিচুর ফলন হয়েছিল ২৮ হাজার মেট্রিক টন। এবার লিচু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩১ হাজার ৭৯০ মেট্রিক টন।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৩ ঘণ্টা, জুন ০৫, ২০২৩
এফআর