ফেনী: ফেনীর সোনাগাজীতে সোমবার (৫ জুন) মা-ছেলে খুনের ঘটনায় ওইদিন রাতেই ৬ জনের নামে মামলা দায়ের করেছেন নিহত হাজেরা খাতুনের মা জাহানারা বেগম।
মামলার আসামিরা হলেন- চরডুব্বা গ্রামের নূরনবীর ছেলে নিহত হাজেরা খাতুনের স্বামী মো. সোহেল, তার ভাই মো. সাইফুল, দিদার, শাশুড়ি কমলা বেগম, জা নাজমা আক্তার ও নয়নসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজন।
সোমবার (৫ জুন) রাতেই ফেনী ও বাড়িতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ এদের মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
গ্রেপ্তাররা হলেন- নিহত হাজেরার দেবর সাইফুল ইসলাম, ভাশুর দিদার, স্বামীর বন্ধু চরলামছি গ্রামের সৈয়দের রহমানের ছেলে নূরুল আফছার এবং স্বামীর ভগ্নিপতি ফেনী সদর উপজেলার ধলিয়া ইউনিয়নের সাড়াশিয়া গ্রামের মৃত আবদুল ওহাবের ছেলে মো. হানিফ।
মঙ্গলবার (৬ জুন) দুপুরে গ্রেপ্তারদের আদালতে তুলে পাঁচদিন করে রিমান্ডের আবেদন করে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
মামলায় জাহানারা বেগম উল্লেখ করেন, ফেনী সদর উপজেলার ধলিয়া ইউনিয়নের ওলিপুর গ্রামের মৃত ছেরাজুল হকের কন্যা হাজেরা খাতুন মনির সঙ্গে ৮ বছর পূর্বে সোনাগাজী উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের উত্তর চরডুব্বা গ্রামের মৃত নূরনবীর ছেলে মোহাম্মদ সোহেলের বিয়ে হয়।
তাদের ঘরে দুটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। একজনের বয়স পাঁচ বছর ও অন্যজনের বয়স এক বছর। সোহেল পেশায় একজন ব্যাটারি চালিত রিকশা চালক। কিছু দিন আগে সোহেল এক প্রতিবেশীর কাছ থেকে প্রতি শতক এক লাখ টাকা মূল্যে মোট দশ শতক জমি দশ লাখ টাকায় কেনার জন্য বায়নাপত্র করেন। নিজের পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া তিন শতক জমি তার দুই সহোদরের কাছে বিক্রি করে দেন। তবে তার স্ত্রী হাজেরা খাতুন ওই জমি কেনায় রাজি ছিলেন না। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রী, দেবর, ভাশুর ও শাশুড়ির মধ্যে পারিবারিক কলহ সৃষ্টি হয়।
সোহেল জমি কেনার জন্য তার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা চেয়ে বিশ হাজার টাকা ধারও এনেছেন। জমি কেনাকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে মোহাম্মদ সোহেলসহ আসামিরা পরিকল্পিতভাবে তার নাতি এমরান হোসেন ইয়ামিনকে (৫) শ্বাসরোধ করে এবং কন্যা হাজেরা খাতুন মনিকে (২৪) দুই হাতের রগ কেটে, পেটে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে নিজ ঘরে রশি দিয়ে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে পালিয়ে যায়। হাজেরার অপর এক বছর বয়সী শিশুপুত্র ইরফান হোসেন আরাফাতকেও হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে আসামিরা।
সোমবার (৫ জুন) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টার মধ্যে আসামিরা এ নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটায়। দুপুরে খবর পেয়ে পুলিশ মা-ছেলের মরদেহ উদ্ধার করে।
সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ খালেদ হোসেন দাইয়্যান বলেন, বাকী আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে মঙ্গলবার (৬ জুন) দুপুরে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে মা-ছেলের ময়নাতদন্ত শেষে বিকেলে সদর উপজেলার ধলিয়া ইউনিয়নের ওলিপুর গ্রামে হাজেরার বাবার বাড়ির কবরস্থানে মা-ছেলেকে দাফন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৮ ঘণ্টা, জুন ৬, ২০২৩
এসএইচডি/এনএস