ঢাকা: পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়া এলাকায় শত বছরের পুরোনো ডিআইটি পুকুর উদ্ধারে উচ্ছেদ অভিযান করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রাজউক। পুকুর ভরাট করে নির্মিত স্থাপনার বেশির ভাগই গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ জুন) দুপুর দেড়টায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। বুধবার (৭ জুন) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস পুকুর দখলমুক্ত করার ঘোষণা দেন। এরপর আজ উদ্ধার অভিযান পরিচালিত হয়।
পুকুরটি রক্ষার জন্য স্থানীয় লোকজন মানববন্ধন করেছেন। পুকুর রক্ষায় সরকারের সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা ও বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) পুকুর ভরাটকারী ব্যক্তিদের আইনি নোটিশ পাঠিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুপুর দেড়টা থেকে বিকেল পৌনে চারটা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে শতাধিক স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
রাজউকের অভিযান শেষে সরেজমিনে ডিআইটি পুকুরের চার পাশ ঘুরে দেখা যায়, স্থানীয়রা রাজউকের ভেঙে দিয়ে যাওয়া স্থাপনাগুলো থেকে তাদের মালামাল বের করছেন। পুকুরকে কেন্দ্র করে চারপাশে গড়ে উঠা প্রায় সব অবৈধ স্থাপনা ভাঙ্গা অবস্থায় পড়ে আছে। সে ধ্বংসস্তূপগুলো স্থানীয়রা পরিষ্কার করছেন।
পরিবেশবিদদের চাপের মুখে পড়ে পুকুর বাঁচাতে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হলে সেখানে থাকে বেশ কয়েকটি আম গাছ কাটা পরে।
এ বিষয়ে মো. আরমান নামের এক স্থানীয় ব্যক্তি অভিযোগ তুলে বলেন, পরিবেশবিদরা পুকুর বাঁচাতে চায় ভালো কথা। কিন্তু তাদের সামনে অভিযান পরিচালনার সময় এই গাছ গুলো কেন কেটে ফেলা হল। গাছ কী পরিবেশের বাইরে নাকি। যদিও ভেঙে যাওয়া স্থাপনাগুলোর মধ্যে আমার কিছুই নেই। আমি এই এলাকার স্থানীয়। কিন্তু এ লোকদের উচ্ছেদের আগে ১০ মিনিট সময় দেওয়া হয়েছে।
পুকুরের এক পাশে পুরোনো ব্যাটারি এবং রিকশা দোকান ছিল দেলোয়ার এবং নুরইসলাম নামের দুই ব্যক্তির। তারা সেখানে স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছ থেকে দোকান ভাড়া নিয়েছিল প্রায় দেড় বছর আগে। রাজউক উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে যাওয়ার পর তারা দোকানের অবশিষ্ট মালামালগুলো সরাচ্ছিল।
কথা হলে তারা বাংলানিউজকে জানান, দুপুরে উচ্ছেদ করতে এলে তাদের ১০ মিনিট সময় দেওয়া হয়। এত অল্প সময়ে তাড়াহুড়া করে তারা দোকান থেকে তেমন কোন মালামাল বের করতে পারেনি। দোকান ভেঙে দেওয়াতে সব পুঁজি হারিয়েছেন বলেও জানান তারা।
প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন-২০০০ অনুযায়ী কোনো পুকুর-জলাশয়, নদী-খাল ভরাট করা বেআইনি। গেন্ডারিয়া পুকুর খনন করা হয় ব্রিটিশ আমলে। তখন গেন্ডারিয়া থেকে যাত্রাবাড়ী, ধোলাইখাল, সায়েদাবাদ ও কুতুবখালী দিয়ে মানুষ নৌকায় যাতায়াত করত। কালের বিবর্তনে গেন্ডারিয়ার জলাধার বিলীন হয়ে যায়।
১৯৯২ সালে তৎকালীন ডিআইটি গেন্ডারিয়া এলাকার ১৩ দশমিক ৫৭ একর জমি অধিগ্রহণ করে। সেখানে দুই একর পরিমাণ একটি পুকুর ছিল।
বাংলাদেশ সময়: ০১২০ ঘণ্টা, জুন ০৯, ২০২৩
ইএসএস/এএটি