ব্রাহ্মণবাড়িয়া: গ্রামীণ ক্রীড়া সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য গুটি দাড়া খেলা একদা গ্রামবাংলার ডানপিটে, দুরন্ত শিশু-কিশোরদের মধ্যে ছিল জনপ্রিয়। বয়স্ক লোকদের কাছে গুটি দাড়া এখনো শৈশব স্মৃতি।
প্রাচীন এই খেলার ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও ক্রীড়া সংগঠক ডা. ফরিদুল হুদা স্মরণে সাহিত্য অ্যাকাডেমির উদ্যোগে ঐতিহ্যবাহী গুটি দাড়া খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শীতকালে কৃষি জমিতে যখন ফসল না থাকে তখন এ খেলার আয়োজন করে আসছে সাহিত্য একাডেমি।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিকেলে পৌর এলাকার শেরপুরে ধানি জমিতে এ খেলা হয়। মহিষের শিং দিয়ে বিশেষ ভাবে তৈরি এক ধরনের গুটি ও দেড় হাত লম্বা বাঁশের দাড়া দিয়ে প্রবীণ-নবীনের মাঝে এই খেলা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতি দলে ১১জন করে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে খেলায় অংশ নেন প্রবীণ ও নবীনরা। বাঁশের মোটা লাঠি দিয়ে মহিষের শিংয়ের তৈরি ছোট্ট গুটিটিতে সজোরে আঘাত করা হয়। গুটিটি লুফে নিতে পারলে আউট। গুটিটি কেউ ধরতে পারলো কিনা তার ওপর নির্ভর করে পয়েন্ট। এভাবেই খেলার হারজিত নির্ধারিত হয়। খেলার নির্ধারিত এক ঘণ্টায় লাল দল ও সবুজ দল উভয়ই ৮ পয়েন্ট করে অর্জন করায় ফলাফল ড্র ঘোষণা করা হয়। খেলা শেষে দু’দলের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাহিত্য অ্যাকাডেমির সভাপতি কবি জয়দুল হোসেন, ডা. ফরিদুল হুদার ছেলে ডা. নাজমুল হুদা বিপ্লব, প্রেসক্লাবের সভাপতি জাবেদ রহিম বিজন, সাধারণ সম্পাদক বাহারুল ইসলাম মোল্লা, টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিশনের সভাপতি আল আমীন শাহীন, সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান লিমন, সাহিত্য অ্যাকাডেমির সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম আশরাফ, সাংবাদিক ইব্রাহিম খান সাদত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
গুটি দাড়া খেলাটি উপভোগ করতে শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নারী-পুরুষ ভিড় জমায়। তাদের পছন্দের দলকে সমর্থন জানিয়ে উৎসাহ দেন আগত দর্শকরা। হই হুল্লোর আর কোলাহলে পুরো মাঠ এক মিলন মেলায় পরিণত হয়।
আয়োজকরা জানান, যুব ও তরুণ সমাজকে বিপথগামী হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে এবং প্রাচীন এই খেলার ঐতিহ্য ধরে রাখতেই এই খেলার আয়োজন করা হয়। গুটি দাড়া খেলাটি ২০০৭ সাল থেকে সাহিত্য অ্যাকাডেমির আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০২৫
আরএ